RG Kar Protest

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে ‘দুর্গার ভান্ডার’ নিতে চাননি বলে বিরোধ! ইস্তফা পুজো কমিটির সম্পাদকের

লসিট গ্রামের বারোয়ারি দুর্গাপুজো দেড়শো বছর পার করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা চাঁদা তুলে পুজো করেন। তবে কয়েক বছর ধরে সরকারি অনুদানও পাচ্ছে ওই পুজো। এ বছর অনুদানের অঙ্ক হয়েছে ৮৫ হাজার টাকা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৪ ২০:৪৯
Share:

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে ‘দুর্গা ভান্ডার’ প্রত্যাখ্যান করছে একের পর এক পুজো কমিটি। একই পথে গিয়ে রাজ্য সরকারের ৮৫ হাজার টাকা অনুদান নেবেন না বলে জানিয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমানের পালসিট সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সম্পাদক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু পুজো কমিটির সদস্যেরা তাতে রাজি হননি। তাঁরা সরকারি অনুদান প্রত্যাখ্যান করতে না-চাওয়ায় সম্পাদকের পদ ছাড়লেন রাজীব। ক্লাবের সদস্যেরা তাঁর সঙ্গে একমত হননি বলে সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

পালসিট গ্রামের ওই বারোয়ারি দুর্গাপুজো দেড়শো বছর পার করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা চাঁদা তুলে পুজো করেন। তবে গত কয়েক বছর ধরে সরকারি অনুদানও পাচ্ছে ওই পুজো। এ বছর অনুদানের অঙ্ক বেড়ে হয়েছে ৮৫ হাজার টাকা। পুজোর খরচের বোঝা তাতে অনেকটাই হালকা হওয়ার কথা। তবে রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্কের প্রাক্তন আধিকারিক রাজীব পালসিট সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সম্পাদক হিসাবে এ বার অনুদানে ‘না’ করেছিলেন। সম্পাদকের কথায় রাজি হননি সব সদস্য। দিন কয়েক আগে এ নিয়ে পুজো কমিটির মিটিং হয়। সেখানেও রাজীব প্রস্তাব দেন, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে এ বার তাঁরা সরকারি অনুদান নেবেন না। কিন্তু সিংহভাগ সদস্য সায় দেননি তাঁর প্রস্তাবে। তার পরেই শুক্রবার ইস্তফার কথা ঘোষণা করেন রাজীব।

রাজ্যের মহিলাদের জন্য সরকার ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্প চালু করেছিল ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরে। আর ‘দুর্গার ভান্ডার’ অর্থাৎ দুর্গাপুজোর অনুদান চালু হয়েছিল ২০১৭-১৮ সালে। ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ পেতে হলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, আধার কার্ডের প্রতিলিপি এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ দিয়ে সরকারের নির্দিষ্ট পোর্টালে আবেদন করতে হয়। ‘দুর্গার ভান্ডার’ পেতে গেলেও তেমনই পোর্টালে আবেদন করতে হয়। তার জন্য সংশ্লিষ্ট ক্লাবের হিসাবপত্র, তার আগের বছরের অনুদানের হিসাব, দমকলের ছাড়পত্র, বিদ্যুত সংযোগের নথিপত্র এবং আগের বছরের প্রদেয় বিদ্যুতের বিলও আপলোড করতে হয়। পার্থক্য একটিই— লক্ষ্মীর ভান্ডার পান মহিলারা এবং এটি মাসিক ভাতা। ‘দুর্গার ভান্ডার’ মেলে বছরে এক বার। সেটি পায় ইচ্ছুক পুজো কমিটি। এ বার হুগলির উত্তরপাড়ার একটি ক্লাব থেকে শুরু হয় অনুদান প্রত্যাখ্যান। তার পর রাজ্যের বেশ কয়েকটি ক্লাব একই পথে হেঁটেছে। কিন্তু রাজীব তাঁদের পুজো কমিটির সম্পাদক হিসাবে সেই রাস্তায় গিয়ে বিরোধিতার মুখে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এক জন চিকিৎসক তাঁর কাজের জায়গায় ধর্ষিতা হচ্ছেন, খুন হচ্ছেন অথচ সরকার অপরাধীদের আড়াল করছে, এটা আমার পক্ষে মেনে নেওয়া অসম্ভব। তাই চেয়েছিলাম আমরা পুজোর অনুদানের ৮৫ হাজার টাকা না নিয়ে সরকারের কাছে আমাদের প্রতিবাদ জানাব। কিন্তু অন্য সদস্যেরা আমার প্রস্তাবে সায় দেননি। তাই সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দিলাম। তবে পুজোর সঙ্গে থাকব। এটা আমাদের গ্রামের দুর্গাপুজো। কিন্তু কোনও কাজের দায়িত্ব নেব না। কোনও পদে থাকব না।’’

Advertisement

এ নিয়ে বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক বলেন, ‘‘এটা একেবারেই রাজীববাবুর নিজস্ব ব্যাপার। তিনি সরকারি অনুদান না নেওয়ার পক্ষে। কিন্তু গ্রামবাসীরা তাতে রাজি হননি। তাই তিনি পদত্যাগ করেছেন। তিনি যা ভাল বুঝেছেন, তা-ই করেছেন। তাতে কার কী বলার থাকতে পারে!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement