Bardhaman

সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ হারিয়ে শাগরেদদের নিয়ে তোলাবাজি! কাটোয়ায় ধৃত চার ‘এমভিআই অফিসার’

পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, ধৃত এক ব্যক্তি আগে সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ করতেন। একাধিক বার মারপিটের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ায় বছর তিনেক আগে বহিষ্কার করা হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৪ ২২:২৭
Share:

কাটোয়ায় ধৃতদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

সঙ্গে ঝাঁ চকচকে গাড়ি। রাস্তার পাশে সেটি দাঁড় করিয়ে তোলাবাজি করছিলেন মোটর ভেহিক্যাল ইন্সপেক্টর (এমভিআই) সেজে। এমনই অভিযোগে চার যুবককে গ্রেফতার করা হল বর্ধমানের কাটোয়ায়। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ হারানো এক বিজেপি নেতাও।

Advertisement

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বর্ধমান কাটোয়া রাজ্য সড়কে ওই চার যুবককে পাকড়াও করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে একটি চারচাকার গাড়ি। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ১০টি মোবাইল ফোন এবং ১৯ হাজার টাকা।

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম শুভঙ্কর মণ্ডল, কৃপাময় ঘোষ ওরফে রিন্টু, বিপ্লব সরকার এবং সুব্রত মণ্ডল। এঁদের মধ্যে শুভঙ্করের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ফলতা থানার নিত্যানন্দপুর গ্রামে। কৃপাময় কেতুগ্রামের রসুই গ্রামের বাসিন্দা। বাকি দু’জনের বাড়ি নাদনঘাট থানার মধ্য শ্রীরামপুর এলাকায়।

Advertisement

পুলিশি তদন্তে উঠে আসে, কৃপাময় আগে কেতুগ্রাম থানায় সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ করতেন। একাধিক বার মারপিটের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ায় বছর তিনেক আগে বহিষ্কার করা হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর ওই কাজ হারানোর পর রাজনীতিতেও জড়ান কৃপাময়। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেতুগ্রামের বিল্বেশ্বর পঞ্চায়েতে বিজেপির হয়ে ভোটেও লড়েছিলেন। যদিও পরাজিত হন।

বৃহস্পতিবার রাত তখন প্রায় দেড়টা। কাটোয়া থানার পুলিশের কাছে খবর আসে বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কে কয়েক জন মিলে পাথরবোঝাই গাড়ি আটকেছেন। ওই যুবকদের সঙ্গে গাড়িচালকের দীর্ঘ ক্ষণ ধরে বাগবিতণ্ডা চলছে। এই খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ জানতে পারে চার যুবক নিজেদের এমভিআই আধিকারিক পরিচয় দিয়ে রাস্তা যাতায়াত করা পণ্যবোঝাই গাড়ি আটক করছেন। প্রথমে কাগজপত্র দেখতে চান তাঁরা। তার পর এক-দু’কথার পর মোটা অঙ্কের টাকার দাবি করেন।

পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই যুবকদের কাছে তাঁদের পরিচয়পত্র দেখতে চান। কিছু ক্ষণ কথাবার্তার পর চার জনের কথাতেই নানা অসঙ্গতি পান তদন্তকারীরা। তখন চার জনকেই আটক করে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। পরে পুলিশের জেরায় অভিযুক্তেরা স্বীকার করে নেন যে এমভিআই পরিচয় দিয়ে রাস্তায় গাড়ি আটকে তোলাবাজি করছিলেন তাঁরা। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয় তার পর। তাঁদের কাছে থেকে নগদ ১৯ হাজার টাকা মেলে। তা ছাড়া যে ঝাঁ চকচকে কালো রঙের চারচাকা গাড়ি চেপে এসেছিলেন ওই চার জন, সেই গাড়িটিও আটক করেছে পুলিশ।

তদন্তে উঠে আসে জাতীয় সড়কে তোলাবাজির আগে কাটোয়া সংলগ্ন অজয় নদের একটি বালিঘাটে গিয়েছিলেন অভিযুক্তেরা। কিন্তু বালিঘাটে তখন ইজারাদারের কর্মচারীরা ছিলেন। সেখানে কাছে ‘সুবিধা’ করতে না পেরে জাতীয় সড়কে গিয়ে তোলাবাজি শুরু করেন তাঁরা। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে পুলিশ জানার চেষ্টা চালাচ্ছে এই চক্রে আর কারা জড়িত রয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement