আহত পুলিশকর্মী। নিজস্ব চিত্র
রোগীর আত্মীয়দের হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে ঢোকা নিয়ে ধুন্ধুমার বাধল কাটোয়া হাসপাতালে। নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশের সঙ্গে রোগীর আত্মীয়দের মারপিট বেধে যায় মঙ্গলবার রাতে। এই ঘটনায় এক পুলিশকর্মী, দুই সিভিক ভলান্টিয়ার ও তিন জন রক্ষী জখম হন। হাসপাতাল চত্বর থেকে পুলিশ পাঁচ জনকে আটক করে। পরে তাদের মধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত পৌনে ১১টা নাগাদ মুর্শিদাবাদের সালারের পুনাশি গ্রামের বাসিন্দা, বছর আশির মাফুজা বিবিকে মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। অভিযোগ, রাতে রোগীর বেশ কয়েকজন পুরুষ আত্মীয় ওই ওয়ার্ডে ঢুকতে চান। নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দিলে বচসা বেধে যায়। হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা এসআই নিরঞ্জন বিশ্বাসের অভিযোগ, ‘‘রক্ষীদের সঙ্গে মারপিটের খবর পেয়ে আমরা গিয়ে প্রতিবাদ করি। তখন ক্যাম্পে ঢুকে হামলা চালানো হয়।’’ নিরঞ্জনবাবু আহত হন। হাসপাতালেই তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। নিরাপত্তারক্ষী ও সিভিক ভলান্টিয়ারেরাও আহত হন।
পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় মনিরুল ইসলাম, নাজমুল হুদা ও সালাউদ্দিন মির্জা নামে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার কাটোয়া আদালতে তোলা হলে তাঁদের জামিন মঞ্জুর হয়। ধৃতদের বাড়ির লোকজনের পাল্টা অভিযোগ, নিরাপত্তারক্ষীরাই তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। প্রতিবাদ করায় পুলিশ মারধর করে ‘মিথ্যা’ মামলায় জড়িয়েছে। রোগীর আত্মীয় মেহেবুব চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘হাসপাতালের রক্ষী ও পুলিশকর্মীদের আরও মানবিক হওয়া উচিত।’’
হাসপাতালে নিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার ও রক্ষীদের একাংশের অবশ্য অভিযোগ, বারবারই রোগীর পরিজনদের হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। দিনকয়েক আগেও হাসপাতালে ঢোকা নিয়ে কিছু রোগীর আত্মীয়ের সঙ্গে গোলমাল হয়। এক মহিলা পুলিশকর্মী জখম হন। মাস দেড়েক আগে স্বাস্থ্যকর্মীদের উপরে এক ব্যক্তি চড়াও হয়েছিল বলেও অভিযোগ। এই ধরনের প্রবণতা বাড়তে থাকায় তাঁরা আতঙ্কিত বলে দাবি করেন রক্ষী ও কর্মীদের অনেকে।
কাটোয়া হাসপাতালের সুপার রতন শাসমল বলেন, ‘‘রোগীর আত্মীয়দের শৃঙ্খলা মেনে চলা উচিত। অনেকে তা মানতে চান না। এই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখছি আমরা। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’