শিলান্যাস অনুষ্ঠানে বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
একটি প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে বারাসত হাসপাতালের ভিতরে মাইক বাজিয়ে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়ল রাজ্য সরকার। বিরোধীদের দাবি, হাসপাতালের ভিতরে মাইক বাজানোয় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ওই অনুষ্ঠানে তা-ই করা হয়েছে। রোগীদের অসুবিধা ছাড়াও কী ভাবে এই নিয়ম ভাঙা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী নেতারা। যদিও বিরোধীদের দাবি নস্যাৎ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাল্টা দাবি, হাসপাতালের ক্যাম্পাস থেকে বহু দূরে ওই ওই অনুষ্ঠান হওয়ায় তাতে রোগীদের কোনও ভাবেই অসুবিধা হয়নি।
সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে বারাসত হাসপাতালের জন্য সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা এই প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার ওই প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আরবিসি, ডব্লিউবিসি, প্লাজমা, প্লেটলেটের মতো রক্তের বিভিন্ন উপাদান পৃথক করার জন্য এত দিন বারাসতের বাসিন্দাদের সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কে ছুটতে হত। তবে ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বারাসত হাসপাতালেই সেই পরিষেবা মিলবে। যদিও এই প্রকল্প ঘিরে রাজ্য সরকারের পিছু ছাড়ছে না বিতর্ক।
অভিযোগ, নেতাজি ইন্ডোর থেকে শিলান্যাস হওয়া এই প্রকল্পে বারাসত হাসপাতালে আলাদা মাইকের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে কী ভাবে নিয়ম ভেঙে হাসপাতালের মধ্যে মাইক বাজানো হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী নেতারা। প্রসঙ্গত, হাসপাতালের ভিতরে তো বটেই, তার আশপাশের এলাকাতেও জোরে হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ।
বিরোধীদের প্রশ্ন, রাজ্য সরকারকে হঠাৎ কেন এ ভাবেই মাইক বাজিয়ে বার বার বলতে হচ্ছে যে তারা ভাল কাজ করছেন? প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম এবং বিজেপি-র মতো বিরোধী দলগুলি। সিপিএম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই সরকারের থেকে আত্মম্ভরিতা ছাড়া আর কিছু প্রাপ্তি নেই। যা হয়েছে, তাতে একেবারেই আশ্চর্য হইনি। চিকিৎসাধীন রোগীদের কথা ভেবে সমবেদনা হচ্ছে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তাঁদের শব্দদূষণ সহ্য করতে হচ্ছে।’’
সিপিএমের মতোই সরকারের সমালোচনায় মুখ খুলেছে বিজেপি। দলের বারাসত সাংগঠনিক জেলার যুব সভাপতি কৌশিক মজুমদার বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরাও তৃণমূল কর্মীদের মতো আচরণ করেছেন, যাতে রোগীদের অসুবিধায় পড়তে হয়েছে। আমরা এর নিন্দা করছি।’’ তবে বিরোধী নেতারা সমালোচনা করলেও মাইক বাজানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বারাসত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডলের দাবি, ‘‘যেখানে অনুষ্ঠান মঞ্চ করা হয়েছে, সেখান থেকে হাসপাতাল ক্যাম্পাস অনেকটা দূরে। ফলে রোগীদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তা ছাড়া, নির্দিষ্ট ডেসিবেল মেনেই ওই অনুষ্ঠান করা হয়েছে।’’