চিকিৎসক, অধ্যাপক মনোজ মুখোপাধ্যায় শিশুটিকে পরীক্ষা করে দেখেন, গলায় আটকে আছে রয়েছে বাঁশিটি। নিজস্ব চিত্র
গলায় আটকে ছিল বাঁশি। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের দৌলতে রক্ষা পেল একরত্তি শিশু। হাসপাতালের পরিকাঠামাগত প্রতিবন্ধকতা নিয়েও অস্ত্রোপচার করে বাঁশি বের করে আনলেন চিকিৎসকরা।
পুরুলিয়ার হুড়া এলাকার কলাবনি গ্রামে ৬ বছরের মণীশ বাউরি খেলার সময় হঠাৎই একটি বাঁশি আটকে যায় গলায়। শ্বাসকষ্ট হওয়ায় স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যান বাবা-মা। ক্রমে শিশুটির শ্বাসকষ্ট ও যন্ত্রণা বাড়তে থাকে। অবস্থা খারাপ বুঝে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে বাঁকুড়া হাসপাতালে পাঠানো হয় শিশুটিকে। চিকিৎসক, অধ্যাপক মনোজ মুখোপাধ্যায় শিশুটিকে পরীক্ষা করে দেখেন, গলায় আটকে আছে রয়েছে বাঁশিটি। তিনি পরিবারকে জানান, বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে এই অস্ত্রোপচারের কোনও পরিকাঠামো নেই। শিশুটিকে নিয়ে যেতে হবে কলকাতায়। দুশ্চিন্তায় পড়ে পরিবার। দারিদ্র্যের কারণে কলকাতায় যাওয়ার মতো ক্ষমতা নেই অসহায় মা বাবার। যা করার এখানেই করতে হবে। পরিস্থিতির কথা জানান মা বাবা। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরাও অস্ত্রোপচার করতে রাজি হন।
এর পর ১৩ সদস্যের মেডিক্যাল টিম তৈরি করে অস্ত্রোপচার শুরু করেন মনোজ। তিনি বলেন, ‘‘এই অস্ত্রোপচার একটি বিশেষ পদ্ধতিতে করতে হয়। সেই পরিকাঠামো বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে ছিল না। শিশুটির অস্ত্রোপচারের জন্য পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।’’ পাশাপাশি, এই অস্ত্রপোচারের অভিজ্ঞতা ছিল মনোজবাবুর। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে, অন্যান্য চিকিৎসক ও সহকারী সদস্যদের নিয়ে সাফল্য আসে। বের করে আনা হয় বাঁশি। সন্তানকে সুস্থ ভাবে কাছে পেয়ে এখন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না শিশুটির মা-বাবা।