রবিবার দার্জিলিঙের জিমখানা ক্লাবে নতুন দলের ঘোষণা করলেন অজয় এডওয়ার্ড। নিজস্ব চিত্র।
পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সামনে রেখে তিন বছরের মাথায় আবার নতুন দলের ঘোষণা করলেন অজয় এডওয়ার্ড। রবিবার বিকালে দার্জিলিং জিমখানা ক্লাবে শতাধিক অনুগামীদের নিয়ে নতুন পার্টি, নতুন পার্টির পতাকার ঘোষণা করা হয়েছে।
গত ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে তিনি দিল্লির আম আদমি পার্টির আদলে বিভিন্ন স্তরের লোকজনকে নিয়ে ‘হামরো পার্টি’ তৈরি করেন। প্রায় একই নামের দল সিকিমে থাকায় অজয়ের দলের নাম রেজিস্ট্রেশন করা নিয়ে নির্বাচন কমিশন আপত্তি তোলে। গত শনিবার পুরনো দল তুলে দিয়ে অজয় তৈরি করলেন, ‘ভারতীয় গোর্খা জনশক্তি ফ্রন্ট’।
পাহাড়ের মানুষের দাবিদাওয়া, চা বাগিচা এবং সিঙ্কোনার বাগানের সমস্যা নিয়ে তো বটেই দল মূলত আলাদা রাজ্য তৈরির দাবিকে সামনে রেখেই কাজ করবে বলে দাবি করেছেন অজয়। তাঁর জীবন এ বার থেকে তিনি আলাদা রাজ্য গঠনের জন্য সঁপে দিলেন বলেও দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, ‘‘২০১৭ সালের পরে, পাহাড়ে আলাদা রাজ্যের দাবিকে সামনে রেখে আর কিছু হয়নি। নতুন ফ্রন্ট এ বার থেকেই গোর্খাদের আবেগ পূরণের লক্ষ্যেই কাজ করবে।’’ তিনি জানান, এক সময় আলাদা রাজ্যের দাবি তোলার পরে বিরোধীদের সামজিক বয়কট, জল বন্ধ, পাহাড় ছাড়া থেকে অনেক কিছুই হয়েছে। নতুন ফ্রন্ট তেমন নয়, মানুষকে নিয়ে গণতান্ত্রিক ভাবেই এগিয়ে যাবে।
নতুন দল নিয়ে পাহাড়ের শাসক দল প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি তথা জিটিএ প্রধান অনীত থাপা’র মন্তব্য, ‘‘আমরা ওঁকে নিয়ে ভাবছি না।’’
অজয়ের পাশে নতুন ফ্রন্ট যোগ দিতে এ দিন তৃণমূল, জিএনএলএফ এবং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রাক্তন একাংশ নেতৃত্বকে দেখা গিয়েছে। প্রাক্তন আইপিএস নরবু ঘিসিং, প্রবীণ জনমুক্তি মোর্চা নেতা প্রদীপ প্রধান, জিএনএলএফ থেকে সাসপেন্ড হওয়া মহেন্দ্র ছেত্রী, বিমল গুরুং ঘনিষ্ট মোর্চার প্রাক্তন নেতা প্রকাশ গুরুং, তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া সারদা রাই সুব্বা ছাড়াও সম্প্রতি দলত্যাগী তৃণমূলের পাহাড়ের সাধারণ সম্পাদক এনবি খাওয়াসকে মঞ্চে দেখা গিয়েছে।
সেই সঙ্গে সিকিমের পবন চামলিং ঘনিষ্ট জগদীশ শর্মাকেও দেখা যায়। যা নিয়ে শাসক দলের অন্যতম নেতা শক্তিপ্রসাদ শর্মার দাবি, সিকিমে পবন চামলিং জমনা শেষ হয়েছে। এবার দার্জিলিঙে সিকিমের লোকজনকে ঢুকিয়ে নতুন রাজনীতি করানো হচ্ছে কিনা, তা দেখতে হবে।
গত কয়েক মাস ধরেই অজয় নতুন দল বা মঞ্চ তৈরির কথা বলেছিলেন। বিশেষ করে, ভাইচুং ভুটিয়ার এক সময়কার দল হামরো সিকিমের সঙ্গে নামের মিল থাকায় হামরো পার্টির রেজিস্ট্রেশন করেনি নির্বাচন কমিশন। এ দিন অবশ্য নতুন দলকে নিয়ে সেই আশঙ্কা আবার দেখা দিয়েছে।
শাসক দলের নেতারা জানাচ্ছেন, ভারতীয় গোর্খা জনশক্তি বলে দার্জিলিং থেকে একটি দলের রেজিস্ট্রেশন ছিল। পরে তা বাদ যায়। যেমন ভাবে হামরো সিকিম দলও উঠে গিয়েছে। তার পরেও হামরো পার্টি নাম মেলেনি। এ বার ভারতীয় গোর্খা জনশক্তি ফ্রন্ট নিয়ে কী হয় তাই দেখার।