প্রতীকী ছবি।
বছর পাঁচেক আগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে এক প্রবীণ ব্যবসায়ীর ঋণের আবেদন মঞ্জুর হয়েছিল। কিন্তু ওই ব্যবসায়ীর অগোচরে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁর নামে অনলাইনে ২০ লক্ষ টাকা বেরিয়ে যায়। অথচ সেই লেনদেনের কোনও ‘ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড’ (ওটিপি) পাননি হরিশ চোপড়া নামে কলকাতার ওই ব্যবসায়ী। এই ঘটনার পরেই তিনি পুলিশ এবং ব্যাঙ্কের দ্বারস্থ হন। তদন্তের পরে বিধাননগর সাইবার থানা জানিয়ে দেয়, তারা অপরাধীকে ধরতে পারেনি। ব্যাঙ্কও সমস্যা মানতে চায়নি। বরং হরিশ ওই টাকা ঋণ বাবদ নেওয়ায় মোটা হারে সুদও চাপাতে শুরু করে তারা।
২০১৬ সালের এই ঘটনায় শেষ পর্যন্ত রাজ্যের সাইবার অ্যাডজুডিকেশনের দ্বারস্থ হন হরিশ। মঙ্গলবার রাজ্যের সাইবার অ্যাডজুডিকেশন অফিসার তথা তথ্যুপ্রযুক্তি সচিব রাজীব কুমার নির্দেশ দিয়েছেন, হরিশকে ওই টাকা ফেরত দিতে হবে না। এই নির্দেশের দিন থেকে ব্যাঙ্ক ওই টাকার উপরে সুদ নিতে পারবে না এবং এ-পর্যন্ত নেওয়া সুদের টাকাও তাদের ফেরত দিতে হবে। ক্ষতিপূরণ বাবদ ব্যাঙ্ক হরিশকে ৪০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য থাকবে।
হরিশের আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানান, তাঁর মক্কেল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ২০ লক্ষ টাকা ক্যাশ ক্রেডিট ঋণ নেন। তার পরেই হরিশের অ্যাকাউন্ট থেকে চারটি ‘আরটিজিএস’ মারফত ২০ লক্ষ টাকা অন্য একটি অ্যাকাউন্টে চলে যায়। কিন্তু এই লেনদেনের কোনও ওটিপি পাননি হরিশ। পুলিশের তদন্তেও সেটা স্বীকার করে নেওয়া হয়। সাইবার অ্যাডজুডিকেশনের মামলায় সেটিই বড় প্রমাণ হয়ে দাঁড়ায়। কার ভুলে বা গাফিলতিতে এবং কী ভাবে এটা সম্ভব হল, ব্যাঙ্ক তার সদুত্তর দিতে পারেনি। কোন আইপি অ্যাড্রেস থেকে এটা হয়েছে, তা-ও জানাতে পারেনি ব্যাঙ্ক।
বিভাসবাবুর বক্তব্য, ব্যাঙ্কগুলির কাছে লক্ষ লক্ষ গ্রাহকের তথ্য থাকে। কিন্তু সেই তথ্যের সুরক্ষায় যে ফাঁক রয়েছে, এই ঘটনা তারই প্রমাণ। সাইবার বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সার্ভার বিকল থাকাকালীন এই ধরনের লেনদেন হতে পারে এবং সে-ক্ষেত্রে ভিতরের কোনও লোকের যোগসাজশ থাকাও অস্বাভাবিক নয়।