প্রতীকী ছবি।
দেশে বাড়ছে বিদেশি বন্দিদের সংখ্যা। তাতে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। বিদেশি বন্দিদের বড় অংশই রয়েছে বঙ্গের জেলগুলিতে। তেমনই জানাচ্ছে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) রিপোর্ট। তবে পশ্চিমবঙ্গের থেকে ২০১৮ ও ২০১৯ সালের রিপোর্ট পাওয়া যায়নি বলেও দাবি করেছে এনসিআরবি।
২০১৮ সালে দেশের জেলে বিদেশি বন্দি ছিলেন ৫,১৬৮ জন। ২০১৯ সালে তা বেড়ে হয় ৫,৬০৮। দেশের ১৩৫০টি জেলে পুরুষ ৪,৭৭৬ এবং মহিলা ৮৩২ বিদেশি বন্দি রয়েছেন। তার মধ্যে ২,১৭১ জন সাজাপ্রাপ্ত আর ২,৯৭৯ জন বিচারাধীন। সেই সঙ্গে ৪০ জন আটক বন্দিও রয়েছেন। এনসিআরবি'র রিপোর্ট অনুযায়ী, সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ১,৪৭০ জন বাংলাদেশের নাগরিক। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে নেপাল। সেখানের ২২৮ বাসিন্দা আদালতের নির্দেশ মতো ভারতের জেলে সাজা খাটছেন। তৃতীয় স্থানে থাকা মায়ানমারের ১৫৫ জন বন্দির দিন কাটছে এ দেশের জেলে। সাজাপ্রাপ্ত বিদেশি বন্দিদের মধ্যে ৬৩.৫ শতাংশই রয়েছে বঙ্গের জেলে। সেখানে রয়েছে ১,৩৭৯ জন। যার বেশিরভাগই বাংলাদেশি বন্দি। তেমনই মত রাজ্যের কারা দফতরের কর্তাদের। এই তালিকায় দ্বিতীয় আর তৃতীয় স্থানে থাকা উত্তরপ্রদেশ এবং দিল্লির জেলের বন্দি সংখ্যা ১৪২ ও ৯৬।
সাজাপ্রাপ্তের মতো একচ্ছত্র আধিপত্য না থাকলেও বিচারাধীন বন্দিতেও শীর্ষে রয়েছে ওপার বাংলাই। এ দেশের কারাগারে দিন গুজরান করছেন ১,০৪৩ জন বাংলাদেশের বাসিন্দা। তার ঠিক পরে রয়েছে নাইজিরিয়া। সেখানের ৬৮৬ জন এ দেশের জেলে বিচার শেষ হওয়ায় অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন। পড়শি নেপালের ৫১৭ জনও দেশের জেলে বিচারাধীন বন্দি হিসাবে রয়েছেন। এ ক্ষেত্রেও প্রথম স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। বঙ্গের জেলে রয়েছেন ৫৭৬ বিদেশি বিচারাধীন বন্দি। এনসিআরবি রিপোর্টে, তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র। সেখানের জেলে রয়েছেন ৪৬৬ জন বন্দি। দেশের রাজধানী দিল্লির জেলে বিচারাধীন বন্দির সংখ্যা ৩৮৪।
এনসিআরবি'তে কেন দু’বছর রিপোর্ট জমা পড়ল না, তা নিয়ে অবশ্য কিছু বলতে নারাজ কারা দফতরের আধিকারিকরা। তবে তাঁদের দাবি, ২০২০ সালে তেমনটা হবে না।
বাংলাদেশি বন্দিদের একটা বড় অংশের বিরুদ্ধে বিনা নথিতে ভারতে প্রবেশের অভিযোগ রয়েছে। আর সেই নথির জটিলতাতেই সাজা শেষ হয়ে গেলেও দেশে ফিরতে দেরি হয় অনেকের। বাংলাদেশ থেকে এ দেশে আসার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গই অন্যতম প্রধান করিডর। তাই বাংলাদেশের নাগরিক গ্রেফতারের তালিকা চওড়া হওয়ায় বিদেশি বন্দির সংখ্যা নিরিখে একেবারে সামনের সারিতে রয়েছে বঙ্গের জেলগুলি। সম্প্রতি, রাজ্যের জেল থেকে প্রায় ৬৮০ জন বন্দিকে বাংলাদেশে পাঠাতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যের কারা দফতর।