এই ধরনের পোস্টারই পড়েছে উত্তরপাড়ায়। —নিজস্ব চিত্র
সরস্বতী পুজোয় উত্তরপাড়ায় নীতিপুলিশের ভূমিকায় বজরং দল। গঙ্গার ঘাটে পোস্টার সাঁটিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে, পুজোর দিন জুটি হিসেবে ঘুরলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ধরনের পোস্টারের তীব্র নিন্দা করেছেন স্থানীয় তৃণমূল। দলের নেতাদের অভিযোগ, বিজেপি, বজরং দল একই গোত্রের। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তাঁরা এই ধরনের ‘পাশ্চাত্য সংস্কৃতি’কে সমর্থন করেন না। তবে তাঁরা কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিরোধী। কে বা কারা পোস্টার লাগিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বসন্ত পঞ্চমীর দিন সরস্বতী পুজোর পাশাপাশি বন্ধু ও বান্ধবীর সঙ্গে ঘোরাফেরা, খাওয়া-দাওয়া করে স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারা। প্রেমিকের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে ভিড় জমায় পার্ক, রেস্তরাঁ কিংবা গঙ্গার ধারে। উত্তরপাড়ায় সেই ভিড় দেখা যায় গঙ্গার ঘাটগুলিতে। কিন্তু এ বছর ওই ঘাটগুলিতে পড়েছে বজরং দলের পোস্টার। মঙ্গলবার সকালে ওই হুমকি পোস্টারগুলি নজরে পড়তেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
পোস্টারের বক্তব্য, ‘বসন্ত পঞ্চমী সরস্বতীর আরাধনার দিন। এই দিনটিতে আমাদের সংস্কৃতিকে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি ব্যবহার করে নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। কিছু মানুষ বাংলার 'ভ্যালেন্টাইনস ডে'-তে রূপান্তরিত করে ফেলেছেন এই দিনটিকে। এই পাশ্চাত্য সংস্কৃতি কোনও ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়’। পোস্টারে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারির পাশাপাশি বজরং দলের দাবি, তাদের সরকার এলে এই ধরনের সংস্কৃতি বরদাস্ত করা হবে না।
কিন্তু পোস্টার সরানোর বিষয়ে এখনও কার্যত গা ছাড়া মনোভাব পুলিশের। শ্রীরামপুরে এসিপি গোলাম সরওয়ার বলেন, ‘‘এই রকম পোস্টারের কথা শুনেছি। পোস্টারে একটি দলের নাম লেখা আছে। তবে কারা এই ধরনের পোস্টার লাগিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পোস্টার ঘিরে শুরু হয়ে রাজনৈতিক চাপানউতরও। শ্রীরামপুর পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর সন্তোষ সিংহের অভিযোগ, বিজেপি আর বজরং দল মুদ্রার এ পিঠ ও পিঠ। তিনি বলেন, ‘‘এঁরা সামান্য ক’টা ভোট পেয়েই রাজ্যে এই পরিস্থিতি তৈরি করছে। তা হলে বাংলার মানুষ বুঝুন, আরও কিছু ভোট পেলে এঁরা কী করবে।’’ একই সঙ্গে সন্তোষের পাল্টা হুঁশিয়ারি, যে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, সেই ধরনের কোনও কর্মকাণ্ড দেখলে তাঁরা অভিযুক্তদের পুলিশ-প্রশাসনের হাতে তুলে দেবেন।
তবে বিজেপি-র শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শ্যামল বসুর পাল্টা দাবি, ‘‘বজরং দল আমাদের কোনও শাখা সংগঠন নয়, আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগও নেই। তবে সরস্বতী পুজোকে ভ্যালেন্টাইন ডে হিসেবে পালন করার বিরোধী আমরাও।’’