মঙ্গলবারের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
দলের জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের অপসারণ চেয়ে বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ের কাছে বিক্ষোভ দেখান দলেরই এক দল নেতা, কর্মী। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব তার পরে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, বিক্ষোভের জেরে নেতৃত্বে বদল হওয়ার সম্ভাবনা কার্যত নেই। তবে বিক্ষোভকারীদের থেকে তাঁদের মতামত লিখিত আকারে চাইলেন বাবুল। মঙ্গলবার ওই বিক্ষোভের পরে, দলের কোন্দলই প্রকাশ্যে আসে বলে মত শহরের প্রবীণ বিজেপি কর্মীদের একাংশের।
বুধবার বাবুল বলেন, ‘‘এ নিয়ে বেশি হট্টগোল ঠিক নয়। যা মতবিরোধ আছে আমি লিখিত ভাবে জানাতে বলেছি। মতবিরোধ মেটানোর ব্যবস্থা করছি।’’ কিন্তু মঙ্গলবারের ওই বিক্ষোভ বা বাবুলের মতামত লিখিত ভাবে জানতে চাওয়ার নেপথ্যেও কোন্দলই দেখছেন দলের নেতা, কর্মীদের একটি অংশ।
কেন এমন মনে হওয়া? ওই নেতা, কর্মীদের মতে এর দু’টি কারণ: প্রথমত, মঙ্গলবার রাতের বিক্ষোভের নেতৃত্বে বিজেপির এক জেলা সহ-সভাপতি এবং এক যুবনেতা ছিলেন। তাঁরা দলের অন্দরে সাংসদের ছায়াসঙ্গী হিসেবেই পরিচিত।
দ্বিতীয়ত, লোকসভা ভোটে দলের আসানসোল জয়ের পরেও লক্ষ্মণবাবুকে ধারাবাহিক ভাবে ‘অপসারণের দাবি’ উঠেছে দলের একাংশের মধ্যে, দাবি ওই নেতা, কর্মীদের। ওই নেতা, কর্মীরাই জানান, ওই ‘একাংশ’ দাবি করেছিলেন, আসানসোল ও দুর্গাপুর লোকসভাকে কেন্দ্র করে দু’টি পৃথক সাংগঠনিক জেলা তৈরি হোক। সে ক্ষেত্রে দুর্গাপুরের বাসিন্দা লক্ষ্মণবাবুকে দুর্গাপুরের জেলা সভপতি পদে বসিয়ে অন্য কাউকে আসানসোলের জেলা সভাপতি পদে মনোনীত করা হোক। কিন্তু রাজ্য নেতারা সে দাবি মানেননি।
উল্টে, ওই পরিস্থিতিতে জেলায় ২৭ জন মণ্ডল সভাপতি মনোনয়ন করেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। পরে মণ্ডল সভাপতিদের কাছ থেকে লিখিত সম্মতি নিয়ে রাজ্য নেতারা ফের পশ্চিম বর্ধমানে দলের জেলা সভাপতি হিসেবে লক্ষ্মণবাবুকেই বেছে নেন। কিন্তু তার পরেও দলের ওই ‘একাংশ’ কখনও সভা ডেকে, কখনও বা সাংসদের বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে লক্ষ্মণবাবুর অপসারণ চেয়েছেন বলে দাবি বিজেপি সূত্রের।
যদিও বিজেপির নির্বাচনী সেলের জেলা রিটার্নিং অফিসার পার্থ কুণ্ডু বলেন, ‘‘সভাপতি মনোনয়নের ক্ষেত্রে কোনও রকম পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হয়নি। নিরপেক্ষ ও সর্বসম্মতি ক্রমে জেলা সভাপতির পদে লক্ষ্মণবাবুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’ দলের তরফে আসানসোলের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরীও এমন বিক্ষোভের ফলে জেলা সভাপতিকে বদলে ফেলতে হবে, এমন কোনও কথা নেই বলে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন।
বাবুল অবশ্য দলে কোনও কোন্দল নেই দাবি করে বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটে বিপুল জয়ের নেপথ্যে সংগঠনের যে দলটি কাজ করেছে সেটিকে বদলানো ঠিক নয়।’’ তবে কোন ‘দল’ তা স্পষ্ট করেননি সাংসদ। দলে কোন্দল নেই, দাবি লক্ষ্মণবাবুরও।