বাবুল সুপ্রিয়। ফাইল চিত্র।
ভবানীপুর উপনির্বাচনের প্রচারে বিজেপি-র ‘তারকা প্রচারক’-এর তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে। কিন্তু প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় সেখানে প্রচারে যাবেন না। তাঁর সিদ্ধান্ত বাবুল ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েও দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। দলের তারকা প্রচারকের তালিকায় ৮ নম্বরে ছিল বাবুলের নাম।
শুক্রবার বিজেপি-র তরফে প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালের নাম ঘোষণার পরই বাবুল বলেছিলেন, “প্রিয়ঙ্কা ভবানীপুরে প্রার্থী হওয়ায় আমি খুব খুশি। ওঁর জন্য গর্ববোধ হচ্ছে।” প্রিয়ঙ্কা সম্পর্কে ‘সাহসী’, ‘যুক্তিবাদী’, ‘আত্মবিশ্বাসী’ ইত্যাদি প্রশংসাসূচক শব্দও ব্যবহার করেন বাবুল। একই সঙ্গে প্রিয়ঙ্কাকে ভবানীপুরে টিকিট দেওয়ার জন্য অমিত শাহ, জেপি নড্ডা এবং বিজেপি-কে ধন্যবাদও জানান।
গুরুত্বপূর্ণ ওই কেন্দ্রে শাসক তৃণমূলের প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে যুবনেত্রী তথা আইনজীবী প্রিয়ঙ্কাকে প্রার্থী করেছে গেরুয়া শিবির। সূত্রের খবর, প্রিয়ঙ্কাকে ভবানীপুরে প্রার্থী করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। রাজ্য নেতৃত্বের সেই প্রস্তাবে শেষমেশ সিলমোহর দেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রিয়ঙ্কা একটা সময়ে বাবুলের আইনি উপদেষ্টা ছিলেন। তাঁর প্রচারে বাবুল আসবেন বলেই ধরে নিয়েছিল পদ্মশিবির।
কিন্তু বাবুল শুক্রবারেই ঘনিষ্ঠদের আরও একবার জানিয়ে দেন, তাঁকে আর কোনও রাজনৈতিক মঞ্চে দেখা যাবে না। সেই সূত্রেই তাঁকে দেখা যাবে না প্রিয়ঙ্কার প্রচারেও।
বাবুলের সিদ্ধান্ত জেনে আনন্দবাজার অনলাইন তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিল। প্রশ্নের জবাবে বাবুল যা জানালেন—
আনন্দবাজার অনলাইন: প্রিয়ঙ্কাকে আপনিই বিজেপিতে এনেছেন... ওঁর প্রচারে কি আপনি যাবেন? দল কিন্তু আপনাকে স্টার প্রচারকের তালিকায় রেখেছে!
বাবুল: আমাকে কোনও রাজনৈতিক মঞ্চে দেখা যাবে না সেটা তো আমি আগেই বলেছিলাম। দলের শীর্ষ নেতৃত্বকেও সে কথা অনেক আগে জানিয়েছি। প্রিয়ঙ্কা আর ওঁর পরিবারকেও বুঝিয়ে বলেছি। আর স্টার প্রচারকের তালিকায় আমাকে রাখার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।
আপনার রাজনৈতিক সন্ন্যাসের সিদ্ধান্ত তা হলে ‘ব্যক্তিগত সম্পর্কের’ খাতিরেও বদলাবেন না?
বাবুল: না! ‘ব্যক্তিগত সম্পর্ক’ তো রাজনৈতিক সম্পর্কের ঊর্ধ্বে। আমি প্রিয়ঙ্কাকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছি। নিন্দুকেরা যা বলছিলেন, গতকাল ববি হাকিমও বললেন শুনলাম, যে আমার রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্তটা আসলে ‘নাটক’ আর এটা বলে আমি দলের সঙ্গে ‘দর কষাকষি’ করছি, তা ওঁদের সংকীর্ণ মনের মূল্যায়ন।
কিন্তু দিলীপ ঘোষ তো আবার বলেছেন যে রাজনীতিতে না থেকে সাংসদ থাকা যায় না?
বাবুল: সেটা ওঁর ব্যক্তিগত মতামত। এ সম্বন্ধে আমার কোনও মন্তব্য নেই। আমি জানি যে, দলের টিকিটেই আমি সাংসদ হয়েছি। তাই আমার একান্ত প্রয়াস হবে সাংসদ হিসেবে আসানসোলের মানুষের জন্য, দলের সুনামের জন্য আমার সাধ্যমতো করা, তাই করছি।
প্রচারে অংশগ্রহণ না করার এই সিদ্ধান্তের জন্য দল যদি আপনার বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়?
বাবুল: আমি তা মাথা পেতে নেব।