রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
অভিযোগের তদন্তে মন্ত্রী- জনপ্রতিনিধিদের তলব করে থাকে সিবিআই, ইডি-র মতো সংস্থা। এ বার ওই দুই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তলব করতে চলেছেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই নজির বিরল।
এই ঘটনার মূলে আছে নারদ মামলায় রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম এবং বিধায়ক মদন মিত্রের বিরুদ্ধে ওই দুই সংস্থার দেওয়া চার্জশিট। সম্প্রতি নারদ মামলায় এই তিন নেতার বিরদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় ইডি। সেই সূত্রেই ইডি-র বিশেষ আদালত তাঁদের নামে সমনও জারি করে। সেই সমন স্পিকারের মাধ্যমে অভিযুক্তদের কাছে পৌঁছতে পাঠানো হয় বিধানসভায়। কিন্তু সমন পৌঁছনোর দায়িত্ব বিধাসনভার নয়, জানিয়ে তা অভিযুক্তদের কাছে পাঠাতে অস্বীকার করেন স্পিকার।
এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে ওই চার্জশিট জমার প্রক্রিয়া নিয়েই আপত্তি তুলেছেন স্পিকার। বিধানসভা সূত্রে বলা হচ্ছে, স্পিকারের অগোচরে, তাঁর অনুমোদন ছাড়া সিবিআই, ইডি ওই চার্জশিট দিয়েছে। তাই জনপ্রতিনিধিদের নামে চার্জশিট দেওয়ার ক্ষেত্রে যে আইন রয়েছে তা ‘ইচ্ছাকৃত ভাবে লঙ্ঘন’ করা হয়েছে বলেই মনে করছে বিধানসভার সচিবালয়। এবং তার ‘ব্যাখ্যা’ জানতে সিবিআই, ইডির দুই কর্তাকে তলব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্পিকার।
নারদ মামলা আদালতের নির্দেশে শুরু তদন্তে রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম এবং বিধায়ক মদন মিত্রের নামে চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। সম্প্রতি তাঁদের নামে চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি-ও।
সূত্রের খবর, সিবিআই ও ইডিকে তলব করে স্পিকারের যে চিঠি যাচ্ছে তাতে বলা হয়েছে, বিধায়ক বা সাংসদদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে গেলে সংশ্লিষ্ট বিধানসভা বা লোকসভার স্পিকারের অনুমোদন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে তা করা হয়নি। শুক্রবার স্পিকারের উপস্থিতিতে গোটা বিষয়টি নিয়ে বিধানসভায় একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। সেখানেই ঠিক হয়েছে, সেই চিঠি অবিলম্বে দুই তদন্ত সংস্থার কাছে পাঠানো হবে।
২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের ঠিক মুখেই নারদ ঘুষকাণ্ড সামনে আসে। তখন থেকেই রাজনৈতিক স্তরে এ নিয়ে চাপানউতোর চলছে। রাজ্যের শাসকদলের একাধিক মন্ত্রী, সাংসদ ও জনপ্রতিনিধিদের নামে ঘুষের অভিযোগে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। এমনকি সম্প্রতি ইডি-র দেওয়া চার্জশিট নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, ওই মামলায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নামে অভিযোগ উঠলেও রাজনৈতিক কারণেই চার্জশিটে তাঁর নাম দেওয়া হয়নি। গত বুধবারও ভবানীপুরের উপনির্বাচনে প্রথম কর্মিসভায় দাঁড়িয়ে নারদ মামলায় তৃণমূলের এই তিন নেতার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করে এ নিয়ে পাল্টা অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।