(বাঁ দিকে) অভীক দে। বিরূপাক্ষ বিশ্বাস (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে আবার ফিরলেন চিকিৎসক অভীক দে এবং বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। আরজি কর-কাণ্ডের আবহে সরকারি হাসপাতালে ‘দাদাগিরি’তে নাম জড়ানোর পরে কাউন্সিল জানিয়েছিল, তাদের বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন না ওই দু’জন। সোমবার কাউন্সিল সেই আদেশ প্রত্যাহার করল। জানাল, অভীক এবং বিরূপাক্ষের বিরুদ্ধে ওই পদক্ষেপ আইনের ভিত্তিতে করা হয়নি। তখনকার ‘পরিস্থিতি’তে করা হয়েছিল। সোমবার কাউন্সিলের বৈঠকে যোগও দেন অভীক। তার পরেই জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টরসের তরফে প্রশ্ন তোলা হয় যে, অভীক, বিরূপাক্ষকে কাউন্সিলের বৈঠক থেকে বাদ দেওয়ার চিঠি কি তবে ‘ভাঁওতা’ ছিল। কাউন্সিলের দফতরের সামনে জড়ো হয়েছেন সংগঠনের সদস্যেরা। রাতে সেখানেই অবস্থান করবেন বলে খবর। ছাউনি তৈরির চেষ্টাও করেছেন তাঁরা। সেই নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে বলে অভিযোগ।
সোমবার রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের এক কর্তা বলেন, ‘‘অভীক এবং বিরূপাক্ষকে বৈঠকে যোগ দিতে বারণ করার সিদ্ধান্ত আইনের ভিত্তিতে হয়নি। ওই সময়ে করে দিয়েছিলাম।’’ কাউন্সিলের তরফে আরও জানানো হয়েছে, তাদের আইনে এই পদক্ষেপ করার বিধান ছিল না। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক বিরূপাক্ষ মেডিক্যাল কাউন্সিলের পেনাল এবং এথিক্স কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন আরএমও অভীক কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। সোমবার কাউন্সিল আদেশ তুলে নিলে বৈঠকে যোগ দেন তিনি। এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে চিকিৎসকদের সংগঠন। তাদের প্রশ্ন, কাউন্সিলের কাজকর্ম থেকে বাদ দেওয়ার চার মাসের মধ্যে আবার কী ভাবে ফিরলেন দু’জন। কাউন্সিলের আগের সিদ্ধান্তকে ‘ভাঁওতা’ বলেও দাবি করেছেন তাঁরা।
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই পরিস্থিতিতে সরকারি হাসপাতালে ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ উঠেছে। তাতে নাম জড়িয়েছিল অভীক এবং বিরূপাক্ষের। আরজি কর-কাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে এসএসকেএমের চিকিৎসক-পড়ুয়া অভীকের উপস্থিতি নিয়েও উঠেছিল একাধিক অভিযোগ। ওই হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত না-হয়েও তিনি সেখানে কী করছিলেন, সেই প্রশ্ন ওঠে। তাঁর এসএসকেএম হাসপাতালে পিজিটি পাওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল কিছু চিকিৎসক সংগঠন। দু’জনকেই সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করেছিল স্বাস্থ্য ভবন। তাঁদের সিজিও দফতরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। অভীক, বিরূপাক্ষের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছিল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। সেই পদক্ষেপ এ বার প্রত্যাহার করা হল।