টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের জামিনের বিরোধিতা সিবিআইয়ের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের জামিনের আবারও বিরোধিতা করল সিবিআই। আরজি করের চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সিবিআইয়ের বক্তব্য, জামিন পেয়ে পালিয়ে যেতে পারেন অভিজিৎ। কেন তারা এ কথা ভাবছে, তার সপক্ষে যুক্তিও দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাদের ব্যাখ্যা, তদন্তের প্রয়োজনে রাজ্যের এক পুলিশ কমিশনারের কাছে পৌঁছতেই পারছিল না তারা। যদিও সেই পুলিশ কমিশনার প্রাক্তন না বর্তমান, তাঁর পরিচয়ই বা কী, এ সব নিয়ে আদালতে কিছু বলেনি সিবিআই। অভিজিতের মতো সন্দীপেরও জামিনের বিরোধিতা করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সন্দীপ এবং অভিজিতকে ১০ দিন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার আবেদন করে সিবিআই। আগামী ৯ ডিসেম্বর ফের তাঁদের আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছে শিয়ালদহ আদালত।
আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সেই মামলার শুনানি ছিল শিয়ালদহ আদালতে। মামলায় ধৃত সন্দীপ এবং অভিজিতের জামিনের আবেদন করেন তাঁদের আইনজীবীরা। সেই আবেদনেরই বিরোধিতা করেছে সিবিআই। টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিতের জামিনের আবেদনের সওয়ালের সময় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বাংলার এক পুলিশ কমিশনারের প্রসঙ্গ তোলে আদালতে। সিবিআই দাবি করে, জামিন পেলে অভিজিৎ পালিয়ে যেতে পারেন। অভিজিতের আইনজীবী পাল্টা সওয়াল করে জানান, তাঁর মক্কেল সরকারি কর্মচারী। তাঁর পালানোর কোনও সম্ভাবনা নেই। এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘‘সরকারি কর্মচারী যে পালাতে পারেন না, এমন কথা কে দিয়েছে?’’ অভিজিতের আইনজীবী সওয়াল করে জানতে চান, ‘‘পালানোর উদাহরণ কি আপনার কাছে রয়েছে?’’ সেই সময়ে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘‘এই রাজ্যেই রয়েছেন, এমন এক পুলিশ কমিশনারের কাছে পৌঁছনো যাচ্ছিল না।’’ যদিও তাঁর নাম আদালতে প্রকাশ করেনি সিবিআই।
অন্য দিকে, সন্দীপের জামিনের আবেদন করে তাঁর আইনজীবী জানান, তদন্তকারীরা বার বার তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করা হয়েছে বলে অভিযোগ করলেও কী নষ্ট করা হয়েছে, তা জানাচ্ছেন না। সিএফএসএল (সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি) থেকে রিপোর্ট এসেছে বলে জানিয়েছে সিবিআই। অথচ সেই রিপোর্টে কোনও তথ্যপ্রমাণ নষ্টের কথা বলা হয়েছে কি না, তা আদালতে জানানো হচ্ছে না। কোথায়, কখন, কী তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করা হয়েছে, স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে না তা-ও। ওই আইনজীবী জানিয়েছেন, ডিভিআর (ডিজিটাল ভিডিয়ো রেকর্ডার) থেকে তথ্য মুছে ফেললে তা আবার উদ্ধারও করা যায়। তা হলে কেন অভিযোগ করছে সিবিআই! সিবিআইয়ের আইনজীবী যদিও পাল্টা দাবি করেছেন, পরিস্থিতির কোনও বদল হয়নি। সন্দীপকে জামিন দেওয়াটা অনুচিত।