পুজোর আগে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর ইলিশ আসছে রাজ্যে। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
উৎসবের মরসুমে বাঙালির পাতে পড়বে বাংলাদেশের ইলিশ। কারণ, দুর্গাপুজো উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গে ৩,৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। প্রতিবেশী দেশ পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ রফতানির জন্য ৭৯টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছে। যদিও ইলিশ রফতানির অনুমোদন চেয়ে ১০০-রও বেশি সংস্থা আবেদন করেছিল। অনুমোদিত সংস্থাগুলির প্রতিটিকে ৫০ টন করে ইলিশ রফতানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারই পেট্রাপোলে সীমান্তে চলে আসছে অনুমোদিত কয়েক টন ইলিশ।
এ নিয়ে ‘ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক আনোয়ার মাকসুদ বলেন, ‘‘আমরা বাংলাদেশ সরকারের তরফে ৩,৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির অনুমতি পেয়েছি। আগামিকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকবে বাংলাদেশের ইলিশ। ৩০ অক্টোবরের মধ্যে রফতানিকৃত ইলিশ চলে আসবে এ রাজ্যে। পশ্চিমবঙ্গের বাজারে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বাংলাদেশি ইলিশ পাওয়া যাবে।’’ তিনি জানান, শনিবার থেকে পাইকারি বাজারে ঢুকে পড়তে পারে বাংলাদেশি ইলিশ। দাম কি মধ্যেবিত্তের নাগালে থাকবে? মাকসুদ জানাচ্ছেন, থাকবে। তাঁর কথায়, ‘‘শুরুর দিকে দাম হয়তো একটু বেশি থাকবে। ১ কেজি ইলিশ পাইকারি বাজারে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে। ৭০০ গ্রামের ইলিশগুলো ৭০০-৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হবে। নভেম্বরের ১০ তারিখ পর্যন্ত এই ইলিশ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বাজারে পাওয়া যাবে।’’
উল্লেখ্য, ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ রফতানি বন্ধ ছিল। ২০১৯ সাল থেকে পুনরায় রফতানি শুরু হয়। ২০২০ সালে দুর্গাপুজোর আগে ৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি হয়। ২০২০ সালে আমদানি হয় ১,৮৫০ মেট্রিক টন। ২০২১ সালে ৪,৬০০ মেট্রিক টন ইলিশের রফতানিতে অনুমতি দিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে হাতে পাওয়া যায় ১,২০০ মেট্রিক টন মতো। একই ভাবে ২০২২ সালে ২,৯০০ মেট্রিক টন পর্যন্ত ইলিশ রফতানির কথা জানায় বাংলাদেশ। রাজ্যে শেষ পর্যন্ত ১,৩০০ মেট্রিক টন ইলিশ ঢোকে।
আগামী ২০ অক্টোবর থেকে দুর্গাপুজো। কিন্তু বাংলাদেশের একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, অক্টোবর মাসেই ২২ দিনের জন্য মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রাখছে সে দেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রক। তার আগেই বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ রফতানির অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে।
শুধু ইলিশই নয়, বাংলাদেশের মিষ্টি জলের মাছ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলা। এ নিয়ে মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অফ কর্মাসের সভাপতি জয়ন্ত কুন্ডু জানান, বাংলাদেশের আমদানি ও রফতানিকারক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়েছে। গত অগস্টে জেলার একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে যায়। একটি বৈঠক হয়। সেখানে বাংলাদেশের মিষ্টি জলের মাছ আমদানির উপর জোর দেওয়া হয়। জয়ন্তের কথায়, ‘‘আমাদের উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে বাংলাদেশের মাছের বিপুল চাহিদা রয়েছে। আবার মালদহ জেলায় উৎপাদিত মাখনা-সহ একাধিক পণ্যের বাজার রয়েছে বাংলাদেশে।’’