—প্রতীকী চিত্র।
‘‘রবিউল তোকে ছাড়া বাঁচা অসম্ভব। ১৯-৯-২৩।’’ ডায়েরির পাতায় এই এক লাইল লিখেছিল একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। পড়ার ঘরেই গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় উদ্ধার হল তার দেহ। দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরের ঘটনা। পুলিশের অনুমান, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করেছে ওই ছাত্রী
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার নাম শাহেরা বানু। ১৭ বছরের শাহেরা নারায়ণপুর হাই স্কুলের একাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। তার পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, দিন পনেরো আগে বুনিয়াদপুর পুরসভার কোটমোড় এলাকার একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকছিলেন মা-মেয়ে। ছাত্রীর মা দিলরুবা বেওয়া পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। তাঁদের আদতে বাড়ি বংশীহারির বলিপুকুর এলাকায়। কাজের সুবিধার জন্য মেয়েকে নিয়ে বুনিয়াদপুর শহরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে ছিলেন তিনি। সেই ভাড়াবাড়িতে আত্মঘাতী হয়েছে মেয়ে।
দিলরুবা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার বিকালে তিনি কাজের জন্য বাইরে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফেরেন। মেয়েকে ডেকেও কোনও সাড়াশব্দ পাননি। মেয়ে যেখানে পড়াশোনা করত সেখানে উঁকি দিয়ে বুকটা ছ্যাঁৎ করে ওঠে মায়ের। দেখেন গলায় ওড়না জড়িয়ে ঝুলছে মেয়ে। তাঁর চিৎকার চেঁচামেচিতে স্থানীয়েরা ছুটে আসেন। ঘরের দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয় ছাত্রীকে। কিন্তু তত ক্ষণে সে মারা গিয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। তারা ছাত্রীকে উদ্ধার করে রশিদপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা জানান, অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে তরুণীর। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই উদ্ধার হওয়া ডায়েরিতে লেখাটি মৃতার কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। কার উদ্দেশে কী কারণে সে এই লাইনটি লিখেছিল, তারও খোঁজ চলছে। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। মৃতার মাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। তবে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বুনিয়াদপুর পুরসভার ঝাড়পুকুর এলাকার রবিউল ইসলাম নামে এক যুবকের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল স্কুলছাত্রীর। পরিবারের দাবি, ওই যুবকের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল মেয়ের। তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল। প্রেমিককে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল সে। কিন্তু ওই যুবক বিয়ে করতে অস্বীকার করেন। এই কারণেই মেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেছেন মা। মেয়ের মৃত্যুর জন্য তিনি ওই যুবকের সঙ্গে তাঁর বাবা-মাকে দায়ী করে তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা দাবি করেন।