University Bill

উপাচার্য নিয়োগে নতুন সার্চ কমিটি গড়তে বিল পাশ বিধানসভায়, আটকাতে রাজভবনে গেল বিজেপি

শুক্রবার বিধানসভায় ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি ল (সংশোধনী) বিল ২০২৩’ পাশ হয়। এর পরেই শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে অধিবেশন থেকে বেরিয়ে এই বিলের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়কেরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৩ ১৭:৫২
Share:

উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত সংশোধনী বিলে রাজ্যপালকে সই না করতে অনুরোধ করেছে বিজেপি। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, সই না হলে বুঝব, রাজভবন বিজেপির কথায় চলছে। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ

অর্ডিন্যান্সের পরে, এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করতে সার্চ কমিটি সংক্রান্ত সংশোধনী বিল পাশ হল বিধানসভায়। শুক্রবার বিধানসভায় ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি ল (সংশোধনী) বিল ২০২৩’ পাশ হল ১২০-৫১ ভোটে। বিলটি পাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে অধিবেশন থেকে বেরিয়ে এই বিলের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়কেরা। বিধানসভায় পাশ হওয়ার পর ওই বিলে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস স্বাক্ষর করলেই তা আইনে পরিণত হবে। কিন্তু শুক্রবারের অধিবেশন শেষ হতেই বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গার নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল রাজভবনে যায়। ওই বিলে রাজ্যপাল যাতে স্বাক্ষর না-করেন, সেই অনুরোধও জানান বিজেপির প্রতিনিধিরা।

Advertisement

প্রসঙ্গত, গত মে মাসে সার্চ কমিটি গঠনে পরিবর্তন এনে অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট এবং কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে কমিটিতে আনা হয় ইউজিসি চেয়ারম্যানের প্রতিনিধিকে। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর এক জন প্রতিনিধিকেও আনা হয় কমিটিতে। আচার্য তথা রাজ্যপাল মনোনীত সদস্যকে কমিটির চেয়ারম্যান করা হবে। এ ছাড়া নতুন বিলের নিদান অনুযায়ী, ওই কমিটিতে থাকবেন সরকার এবং উচ্চ শিক্ষা সংসদের মনোনীত এক জন করে প্রতিনিধি। পাঁচ সদস্যের কমিটি থেকে বাদ পড়েন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট বা কোর্টের (প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক সংস্থা) সদস্যেরা। বিজেপি পরিষদীয় দলের অভিযোগ, এই বিলের মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের ক্ষমতা খর্ব করে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকারের হাতে নেওয়া হচ্ছে। অর্ডিন্যান্স আনার পরে অবশ্য সেটা মেনে কোনও সার্চ কমিটি গঠন করা হয়নি।

এ সবের মধ্যে রাজ্যপালের একতরফা অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাত চরম আকার ধারণ করেছে। বিল নিয়ে বক্তৃতায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর প্রশ্ন, ‘‘প্রাক্তন বিচারপতি ও প্রাক্তন সেনা আধিকারিকদের উপাচার্য পদে বসানো হচ্ছে। এঁদের কি কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করার ১০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে?’’ পরে বিজেপি বিধায়কদের রাজভবনে গিয়ে বিলে স্বাক্ষর না করার অনুরোধ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্যপাল যদি ওঁদের কথায় কাজ করেন, তা হলে তো আমরা বার বার যে অভিযোগ করেছি ‘রাজভবন বিজেপির কথায় চলছে’, তা সত্য বলে প্রমাণিত হবে।’’

Advertisement

এর আগে ২০২২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পথ থেকে রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানো সংক্রান্ত বিল পাশ করেছিল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা। তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বর্তমানে দেশের উপরাষ্ট্রপতি হয়েছে। তার পর অস্থায়ী রাজ্যপাল লা গনেশনও কয়েক মাস রাজ্যের দায়িত্বে ছিলেন। গত বছর নভেম্বরে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন রাজ্যপাল বোস। তাতেও সেই বিল অনুমোদন পায়নি। এ ছাড়াও ধনখড়ের জমানা থেকেই হাওড়া পুর নিগম বিল রাজভবনে আটকে রয়েছে। যে কারণে ভোট করা যাচ্ছে না হাওড়া ও বালি পুরসভায়। তাই উপাচার্য নিয়োগের জন্য আনা সার্চ কমিটি সংক্রান্ত বিল আদৌ রাজভবনের অনুমোদন পাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement