অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী ধৃত সহগল হোসেনকে ‘গ্রেফতার’ করতে পারল না ইডি।
গরু পাচার মামলায় আসানসোলের বিশেষ জেলা আদালতে ধাক্কা খেল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী ধৃত সহগল হোসেনকে নতুন করে গ্রেফতার করা নিয়ে ইডির কোনও কথাই শুনল না আদালত। সহগলকে গ্রেফতার করে দিল্লি নিয়ে যেতে চেয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা। ইডির তরফে সহগলকে গ্রেফতারির নথি (অ্যারেস্ট মেমো)-ও জমা দেওয়া হয় আদালতে। আদালতের পর্যবেক্ষণের পরে ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র দাবি করলেন, সহগল এখন তাদের হেফাজতে আছেন।
শুক্রবার আসানসোল সংশোধনাগারে গিয়ে সহগলকে বেশ কিছু সময় ধরে জেরা করে ‘গ্রেফতার’ করেন ইডি আধিকারিকেরা। জেল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অ্যারেস্ট মেমো জমা দেওয়া হয়। এর পর অ্যারেস্ট মেমোর একটি প্রতিলিপি আদালতে জমা দিয়ে সহগলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন ইডির আইনজীবী। কিন্তু তা শুনতেই চাইলেন না বিচারক। আদালত সূত্রে খবর, ইডির আইনজীবী বিচারককে বোঝানোর চেষ্টা করেন। বলেন, ‘‘তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে সহগলকে গ্রেফতার করতেই হবে। তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া ভীষণ জরুরি।’’ কিন্তু এই ভাবে আদৌ গ্রেফতার করা যায় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারক। তাঁর আরও প্রশ্ন, ইডির কোনও মামলা আসানসোলের আদালতে নেই। তা হলে কিসের প্রেক্ষিতে ইডি সহগলকে গ্রেফতার করে দিল্লি নিয়ে যেতে চাইছে? বিচারক জানান, সহগলকে যদি গ্রেফতার করতেই হয়, তা হলে দিল্লির আদালত (যেখানে ইডির মূল মামলা রয়েছে) থেকে উপযুক্ত কাগজপত্র নিয়ে আসতে হবে ইডিকে। তা হলেই ট্রানসিট রিমান্ডে সহগলকে দিল্লি নিয়ে যেতে দেওয়া হবে।
সহগলের আইনজীবী খুরশিদ আলম বলেন, ‘‘মামলা শুনলেনই না বিচারক। তিনি ইডিকে দিল্লির আদালত থেকে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট নিয়ে আসতে পরামর্শ দেন। সহগল যখন আসানসোল সংশোধনাগারে রয়েছেন, আসানসোল আদালতে বিচারাধীন রয়েছেন, তাঁকে কী ভাবে গ্রেফতার করা যায়? পদ্ধতি সঠিক হলে ইডি যখন খুশি নিয়ে যেতে পারে।’’
যদিও শুনানির পর আদালতের বাইরে বেরিয়ে ইডির আইনজীবী দাবি করেন, সহগল এখন তাদের হেফাজতেই রয়েছেন। আদালতে সেই সংক্রান্ত কাগজপত্রও জমা দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘বিচারক বলেছেন, তিনি ওই মামলা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তাঁর কাছে কোনও রেকর্ড নেই। তাই উনি কিছু শুনতেই রাজি হলেন না। তবে সহগল আমাদের হেফাজতেই আছেন। আমরা আদালতে কাগজপত্রও জমা দিয়েছি। এ বার পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব আমরা।’’