(বাঁ দিকে) অর্জুন সিংহ, পবন সিংহ (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
বিজেপির হয়ে ছত্তীসগঢ়ের ভোট প্রচারে অংশ নিতে যাবেন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলের যোগদানকারী সাংসদ অর্জুন সিংহের বিধায়ক পুত্র পবন সিংহ। গত বছর ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন দলবদল করে তৃণমূলে যোগদান করলেও, বিজেপিতে থেকে গিয়েছেন তাঁর পুত্র পবন। পিতা দলত্যাগ করলেও, বিজেপি বিধায়ক হিসেবে বিধানসভায় সরব হতেও দেখা যায় তাঁকে। তাই এ বার সেই পবনকে ভিন্রাজ্যে বিধানসভা ভোটের প্রচারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপির পরিষদীয় দল। আগামী নভেম্বর মাসে রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশের সঙ্গে বিধানসভার ভোট হবে ছত্তীসগঢ়েও। লোকসভা ভোটের আগে এই তিন রাজ্যে বিজয়কেতন ওড়াতে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। সেই প্রস্তুতি পর্বে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি বিধায়কদেরও ছত্তীসগঢ়ে প্রচারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে সম্প্রতি একটি নির্দেশ এসেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছ থেকে। সেই নির্দেশ পাওয়ার পরেই বিজেপির পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গাকে প্রচারে অংশ নিতে যাওয়া বিধায়কদের তালিকা তৈরি করতে বলেন শুভেন্দু।
সোমবার রাজ্যসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রথম রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজ জয়ের শংসাপত্র নিতে এসেছিলেন। সেই উপলক্ষে বিধানসভায় পরিষদীয় দলের ঘরে এসেছিলেন বিজেপির এক ঝাঁক বিধায়ক। সেই উপলক্ষে বিজেপি পরিষদীয় দলের ঘরে এসেছিলেন অর্জুনের বিধায়ক পুত্র পবনও। সেখানেই তাঁকে ছত্তীসগঢ়ে প্রচারে যেতে হবে বলে জানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। নন্দীগ্রামের বিধায়কের কথায় ঘাড় নেড়ে সম্মতি দিয়েছেন ভাটপাড়ার বিজেপি বিধায়ক। আনন্দবাজার অনলাইনের এক প্রশ্নের উত্তরে পবন বলেছেন, “আমি দলের বিধায়ক। দল যা নির্দেশ দেবে, তা পালন করে চলব। যেখানে প্রচারে পাঠাবে সেখানেই যাব। ছত্তীসগঢ়ে যখন যেতে বলেছে তখন সময় মতো সেখানেও প্রচারে যাব।” বিজেপির পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, মোট ২৭ জন বিধায়ককে ছত্তীসগঢ়ে পাঠানো হবে। সেই তালিকায় পবন ছাড়াও রয়েছেন, অগ্নিমিত্রা পাল, অসীম সরকার, বিমান ঘোষ, সুশান্ত ঘোষ, পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়, শংকর ঘোষ, অশোক দিন্দা, মনোজ ওরাঁও প্রমুখ। তাঁদের সঙ্গে সঙ্গেই ছত্তীসগঢ়ে যাবেন পবন।
গত বছর ২২ মে অর্জুন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করলে, অনেকেই মনে করেছিলেন তাঁর পুত্র পবনও একই পথের পথিক হবেন। কিন্তু, পিতার দলবলের পর প্রায় এক বছর কেটে গেলেও পবন রয়ে গিয়েছেন বিজেপিতেই। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হোক বা বিধানসভার অন্দরে কোন বিল বা ইস্যুতে ভোটাভুটি, সবেতেই ভাটপাড়ার বিজেপি বিধায়ক পালন করেছেন নিজের দায়িত্ব। তাই তাঁর দলের প্রতি আনুগত্য লক্ষ করেই বিজেপির পরিষদীয় দল পবনকে ছত্তীসগঢ়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করছেন বাংলার রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। প্রসঙ্গত, চলতি বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিধায়কদের ত্রিপুরা বিধানসভার ভোটের প্রচারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু ছাড়াও এক ঝাঁক বিজেপি বিধায়ককে সেখানে প্রচারের কাজে লাগিয়েছিল বিজেপি। সেই কৌশল কাজেও এসেছিল বিজেপির পক্ষে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু ছাড়াও বাংলার বিজেপি বিধায়কেরা যে সব আসনে প্রচার করেছিলেন তার বেশিরভাগেই জয় পেয়েছিল বিজেপি। এ বার ছত্তীসগঢ় পুনরুদ্ধারে সেই একই পথ অবলম্বন করতে চলেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।