শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে অনুপস্থিত থাকছে রাজ্য। ফাইল চিত্র।
নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি যাচ্ছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আগেই তা জানা গিয়েছিল। কিন্তু নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছিল রাজ্য প্রশাসনের প্রতিনিধি হিসাবে বৈঠকে যোগ দেবেন কোনও মন্ত্রী কিংবা শীর্ষ আমলা। শুক্রবার, নীতি আয়োগের বৈঠকের ঠিক আগের দিন জানা গেল, নীতি আয়োগের বৈঠকে ‘গরহাজির’ থাকতে চলেছে রাজ্য। অর্থাৎ, রাজ্যের তরফে কোনও প্রতিনিধিই থাকছেন না শনিবারের বৈঠকে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল ২৭ মে নীতি আয়োগের বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ১৫ মে নবান্নে একটি সাংবাদিক বৈঠকে নিজেই সে কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি নীতি আয়োগের বৈঠক নিয়ে ক্ষোভের কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। রাজ্যের দাবিদাওয়া আদায়ে বৈঠকে যোগ দেবেন, এ কথা জানিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সবার শেষে, সূর্যাস্তের পর আমায় বলতে দেবে। ওদের কাছে সূর্যোদয়ের আগে আমার মুখ দেখা যায় না।” তবে নীতি আয়োগের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী গেলে অবিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হওয়ার একটা সুযোগ থাকত। সে ক্ষেত্রে বিরোধী জোট নিয়েও আলোচনার অবকাশ পেত বিরোধী দলগুলি। অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী চলতি সপ্তাহে বা তার পরে দিল্লি যাবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু নীতি আয়োগের বৈঠকে তিনি যোগ দিচ্ছেন না, তা স্পষ্ট।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর পরিবর্তে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য নীতি আয়োগের বৈঠকে যাবেন, তা এক প্রকার স্থির হয়ে গিয়েছিল। সেই মতো কেন্দ্রীয় সরকারকে একটি চিঠি পাঠিয়ে প্রতিনিধিদের নামও জানানো হয়। কিন্তু জবাবি চিঠিতে নাকি কেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে উপস্থিত থাকলেই ‘ভাল’। কেন্দ্র যে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসাবে কাউকে চাইছে না, তা ওই চিঠিতেই স্পষ্ট হয়ে যায় বলে মনে করছে নবান্ন। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “বহু প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। বৈঠকে এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলতাম জেনেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার চাইছে না আমরা দিল্লি যাই।”
নীতি আয়োগের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন যাচ্ছেন না, সেই প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলিও। তৃণমূল অবশ্য পাল্টা যুক্তি দিচ্ছে যে, নীতি আয়োগের ওই বৈঠকে বাংলার বলার সুযোগ আসে অনেক পরে। তা ছাড়া, এত টাকা বকেয়া রেখে এমন বৈঠক ডাকাও অর্থহীন। তবে বাম, কংগ্রেস রাজ্য নেতৃত্ব মনে করছে, রাজ্যের দাবিদাওয়া আদায়ে বৈঠকে নিজে উপস্থিত থাকা উচিত ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। এ ক্ষেত্রে শাসক তৃণমূলের যুক্তি, লোকদেখানো বৈঠক ডাকাই অর্থহীন।