Anupam-Bidyut

অনুপম-বয়ানে ‘অপদার্থ’ বিদ্যুৎ, অমর্ত্যের জমি বিতর্কে দলের উল্টো ‘লাইনে’ বিজেপি নেতা

বিদ্যুতের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করে বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ অনুপমের মত, মেয়াদ শেষের আগে নিজেকে ‘বিজেপি ঘেঁষা’ প্রমাণ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন উপাচার্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:৩২
Share:

অনুপম হাজরা এবং বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। নিজস্ব ছবি।

বিশ্বভারতীর জমি বিবাদ নিয়ে অমর্ত্য সেন এবং কর্তৃপক্ষের মধ্যে টানাপড়েন চলছেই। সেই বিতর্কে এ বার কার্যত উল্টো পথে হেঁটে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকেই আক্রমণ করলেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে বিদ্যুতের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করে বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদের মত, উপাচার্য পদে মেয়াদ শেষের আগে নিজেকে ‘বিজেপি ঘেঁষা’ প্রমাণ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন বিদ্যুৎ। তাতে আদতে সমালোচিত হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী!

Advertisement

রাজনীতির রং আগেই লেগেছে বিশ্বভারতীর জমি বিতর্কে। অর্থনীতিবিদ অমর্ত্যের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হয়ে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। এই পরিস্থিতিতে বোলপুরের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ অনুপম বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীর উপাচার্য যে বিশ্বভারতী চালাচ্ছেন, তাতে মোদীজিকে সমালোচিত হতে হচ্ছে।’’ নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বিশ্বভারতীর প্রাক্তন অধ্যাপকের দাবি, বীরভূমের মানুষ ভাবেন, বসন্ত উৎসব এবং পৌষমেলা পালন বন্ধ হওয়ার পিছনে প্রধানমন্ত্রী মোদী রয়েছেন। কিন্তু উপাচার্যের ‘অপদার্থতা’র জন্যই যে অনুষ্ঠানগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তা স্পষ্ট করা হয়নি।

এর পরেই সরাসরি বিদ্যুৎকে নিশানা করে অনুপম বলেন, ‘‘উপাচার্য পদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে উনি নিজেকে বিজেপি ঘেঁষা প্রমাণ করতে চাইছেন। তাতে মনে হচ্ছে উনি অধ্যাপক কম, বিজেপি নেতা বেশি।’’ জমি বিবাদের মধ্যে অধ্যাপক সেনকে যে ভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, তাকেও সমর্থন করেননি অনুপম। তাঁর মত, ‘‘উনি (অমর্ত্য) জ্ঞানীগুণী মানুষদের একজন। সমালোচনা করতে হলে তাঁর সমগোত্রীয় হতে হয়।’’

Advertisement

অনুপমের এই মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। ঘটনাচক্রে, বীরভূমের রাজনীতিতে গুঞ্জন, উপাচার্য বিদ্যুতের সঙ্গে অনুপমের সম্পর্ক তেমন ‘মধুর’ নয়। বছর ছয়েক আগে বিশ্বভারতীর সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল অনুপমকে। অধ্যাপক স্বপন দত্ত উপাচার্য পদে থাকার সময় চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে বার বার চিঠি দিয়েছিলেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ। পরে বিদ্যুৎ বিশ্বভারতীর উপাচার্য হয়ে আসার পর তাঁর সঙ্গেও দেখা করেছিলেন। কিন্তু অধ্যাপকের চাকরি আর পাননি অনুপম।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীর জমি বিতর্ক প্রসঙ্গে উপাচার্যের পাশে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু দাবি করেছেন, অমর্ত্যের বাড়ির জমি সংক্রান্ত যে সব কাগজপত্র মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে এনেছেন, তা ভুয়ো। এ নিয়ে শাসক-বিরোধী টানাপড়েনের মধ্যে উপাচার্য সম্পর্কে নিজের মত প্রকাশ করলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা সম্পর্কে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ যা বিবৃতি দিয়েছে, তা সমর্থন করেছেন অনুপম। বলেছেন, ‘‘উনি (বিদ্যুৎ) মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে যা বলেছেন, তা সমর্থন করি।’’ প্রসঙ্গত, সম্প্রতিই ‘বেনজির’ প্রেস বিবৃতিতে বিশ্বভারতী লিখেছে, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কান দিয়ে দেখেন!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement