অজন্তা বিশ্বাস।
তৃণমূলের মুখপত্রে ধারাবাহিক উত্তর সম্পাদকীয় লিখে রাজ্য সিপিএমের অন্দরমহলে আলোড়ন ফেলেছেন প্রয়াত সিপিএম নেতা অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাস। সিপিএমের প্রয়াত রাজ্য সম্পাদক তথা পলিটব্যুরো সদস্য অনিলের কন্যার থেকে ওই বিষয়ে ‘জবাবদিহি’ চাইতে পারে অধ্যাপক ও গবেষকদের নিয়ে গঠিত সিপিএমের কমিটি।
অজন্তা তৃণমূলের মুখপত্রে বুধবার থেকে ধারাবাহিক ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ নিয়ে বিশেষ উত্তর সম্পাদকীয় নিবন্ধ লিখছেন। বিষয়টি নজরে এসেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের। রাজ্য সিপিএম নেতৃত্বের কাছে এই ঘটনা অপ্রত্যাশিত ঠেকেছে। তাই দলীয় ‘অস্বস্তি’ কাটাতে নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অজন্তার লেখা নিয়ে যেন প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া না দেওয়া হয়। রাজ্য নেতৃত্বে নির্দেশ মেনে ওই প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি কোনও সিপিএম নেতা। তবে সিপিএমের পার্টি সদস্য হয়ে কী ভাবে একটি বিপরীত আদর্শে বিশ্বাসী দলের মুখপত্রে তিনি নিবন্ধ লিখেছেন, সে বিষয়ে অজন্তার অবস্থান জানতে চাইবে সিপিএম।
রাজ্য সিপিএম সূত্রে খবর, ওই বিষয়ে খুব দ্রুতই অধ্যাপক ও গবেষকদের নিয়ে গঠিত দলীয় কমিটি অজন্তার কাছে জবাবদিহি তলব করতে পারে। অনিল-কন্যা বর্তমানে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। তাই ঠিক হয়েছে, সরাসরি দল নয়, এ ক্ষেত্রে ওই কমিটির শীর্ষনেতারাই অজন্তার সঙ্গে কথা বলবেন। জানতে চাইবেন তাঁর দলীয় অবস্থান। সঙ্গে আরও জানতে চাওয়া হবে, কেন তিনি তৃণমূলের মুখপত্রে নিবন্ধ লিখতে রাজি হলেন।
ঘটনাচক্রে, অজন্তা সিপিএমের পার্টি সদস্য হলেও তাঁর বর্তমান কর্মকাণ্ড অধ্যাপক কমিটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। যদিও কলেজে পড়ার সময় সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয় ভাবে যুক্ত ছিলেন অনিল-কন্যা। বুধ ও বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারেও তাঁর লেখা নিবন্ধের ওপর নজর রাখতে চায় আলিমুদ্দিন। তার পরেই অধ্যাপকদের ওই কমিটি অজন্তার সঙ্গে কথা বলতে পারে বলে খবর রাজ্য সিপিএম সূত্রে।
অজন্তা নিজে ওই বিষয়ে কোথাও মুখ খোলেননি। সংবাদমাধ্যমে তো নয়ই। অনিল-কন্যা মুখ খুলতে না চাইলেও রাজ্য সিপিএমের এক নেতার কথায়, ‘‘দলের যদি মনে হয়, কেউ দলের নীতির পরিপন্থী কিছু করছেন, তা হলে তাঁর কাছ থেকে জবাব চাওয়া হতেই পারে। এতে নতুনত্বের কিছু নেই। সেই ব্যক্তি পার্টির সদস্য হলে তাঁর জবাব দেওয়াটাও শৃঙ্খলাবদ্ধ সদস্য হিসেবে তাঁর কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে।’’
(এই খবর প্রথম প্রকাশের সময় অধ্যাপক ও গবেষকদের নিয়ে গঠিত সিপিএমের কমিটির পরিবর্তে ‘ওয়েবকুটা’র নাম লেখা হয়েছিল। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী)