(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কুণাল ঘোষ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বিদ্বজ্জনদের আমন্ত্রণ জানাননি। তিনি তাঁদের কোনও মতামতও নেবেন না। বৃহস্পতিবারের বৈঠক নিয়ে প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক মহলে যে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তা ‘ভিত্তিহীন’ বলে বিবৃতি দিয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। সূত্রের খবর, স্বয়ং মমতার ‘বার্তা’ পেয়েই কুণাল ওই কথা জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘সৌজন্যে’ ওই সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকের কথা মুখ্যমন্ত্রীর।
কুণাল বলেছেন, ‘‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে বিকেলে বৈঠকে বসছেন এবং নানা বিষয়ে মতামত নেবেন বলে একটি খবর প্রচারিত হচ্ছে। এটি ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিমূলক। একটি গণসংগঠনের তরফ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চাওয়া হয়েছিল। মাননীয়া তাঁদের সময় দিয়েছেন, দেখা করবেন। এইটুকুই। এর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী সব শ্রদ্ধেয় বুদ্ধিজীবীকে ডেকেছেন এবং সাম্প্রতিক নানা বিষয়ে মতামত নেবেন বলে যে ধারণা ছড়ানো হচ্ছে, তার সম্পর্ক নেই। মুখ্যমন্ত্রী কাউকে এমন বৈঠকে আমন্ত্রণ জানাননি। তিনি শুধু ওই সংগঠনের অনুরোধে তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন।’’
রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুরা মিলে ‘দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ’ বলে একটি সংগঠন তৈরি করেছেন। তাতে রয়েছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের কৃতীরা। সেই সংগঠন লোকসভা ভোটের আগে থেকেই বিজেপি-বিরোধী প্রচারে ‘সক্রিয়’ ভূমিকা নিয়েছিল। তৃণমূল সূত্রের খবর, সেই সংগঠনের তরফেই মুখ্যমন্ত্রী মমতার কাছে দেখা করার জন্য সময় চাওয়া হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সেই সময় দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে থেকে কাউকে কোনও বৈঠকে ডাকেননি। দোলা-পূর্ণেন্দুদের ওই সংগঠনও বিবৃতি দিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছে। তাদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর নাম ‘জড়িয়ে’ যে ভাবে বৈঠকের কথা বলা হয়েছে, তা ঠিক নয়।
শাসকদল সূত্রের খবর, বিদ্বজ্জনদের অনেকেই ওই সংগঠনে নেই। তবে তাঁরা ‘সরকার-ঘনিষ্ঠ’ বলেই পরিচিত। ফলে তাঁদের অনেকের মধ্যে এমন ধারণা তৈরি হয়েছে যে, মুখ্যমন্ত্রী বোধহয় বেছে বেছে বিশিষ্টদের বৈঠকে ডেকেছেন। যা মুখ্যমন্ত্রীর জন্য ‘অস্বস্তিকর’ বলে অভিমত শাসকদলের প্রথম সারির নেতাদের অনেকের। বিষয়টি স্পষ্ট করতেই বিবৃতি দিয়েছেন কুণাল।
বুধবার রাতে ওই ‘বৈঠক’-এর খবর ছড়ায়। কিন্তু কী বিষয়ে বৈঠক, তা নিয়ে কোনও মহল থেকেই কিছু বলা হয়নি। ফলে অনেকেই ধরে নেন, রাজ্যে সাম্প্রতিক গণপিটুনির ঘটনা বাড়তে থাকা বা বাংলায় বাঙালির ‘সত্তা’ নষ্ট হওয়ার মতো সাম্প্রতিক কিছু ‘বিতর্কিত’ বিষয়ে বিদ্বজ্জনদের মতামত নিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই জন্যই তিনি বৈঠক ডেকেছেন। কিন্তু কুণালের বক্তব্য, ওই জল্পনা ‘ভিত্তিহীন’। মুখ্যমন্ত্রী কাউকে কোনও বৈঠকে ডাকেননি। তাঁর কাছে সময় চেয়েছিল যে সংগঠন, তাদের তিনি সাক্ষাতের সময় দিয়েছেন মাত্র।