শুভেন্দু অধিকারীর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিলেন অমিত শাহ। —নিজস্ব চিত্র
শুভেন্দু অধিকারীকে দলে টেনে মেদিনীপুরের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন অমিত শাহ। তৃণমূল দলকে দুর্নীতিবাজ, তোলাবাজির দল আখ্যা দিয়ে তোপ দাগেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শুভেন্দু ছাড়াও শনিবার তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বামেদের এক ঝাঁক বিধায়ক, প্রাক্তন সাংসদ-সহ নেতা-কর্মী বিজেপিতে যোগ দেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে অমিতের কটাক্ষ, ‘‘ভোট আসতে আসতে আপনি শুধু একা তৃণমূলে থাকবেন।’’
বিধায়ক পদে ইস্তফা এবং তার পর তৃণমূল ছাড়ার পর জল্পনা ছিল কবে বিজেপিতে যোগ দেবেন শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবারই সেই জল্পনার অবসান হয়েছিল। অবশেষে তার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হল শনিবার বিকেলে। গেরুয়া পতাকা হাতে নিলেন শুভেন্দু। আর সেই সভা থেকেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপোষণের মতো একের পর এক তোপ দাগলেন অমিত শাহ।
মেদিনীপুরের সভায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন মোট ১০ বিধায়ক। এর মধ্যে ৭ জন তৃণমূলের, ২ জন বামেদের এবং ১ জন কংগ্রেসের বিধায়ক। এ ছাড়া পূর্ব বর্ধমানের সাংসদ সুনীল মণ্ডল, আলিপুদুয়ারের প্রাক্তন সাংসদ দশরথ তিরকে, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মতো নেতাও ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মফুলে শামিল হয়েছেন। তাকে হাতিয়ার করে মমতার উদ্দেশে অমিত বলেন, ‘‘এ তো সবে শুরু। আরও অনেক বাকি আছে। ভোট পর্যন্ত তৃণমূলে শুধু আপনি একা থাকবেন।’’
আরও পড়ুন: ‘তোলাবাজ ভাইপো হঠাও’, দল বদলেই স্লোগান তুললেন শুভেন্দু
আমপানের পর রাজ্য সফরে এসে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সেই টাকা দিয়ে দেওয়ার কথাও বলেন। কিন্তু সেই ত্রাণের টাকা বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, আমপানের টাকায় দুর্নীতি হয়েছে কিনা, তা সিএজি-কে দিয়ে তদন্ত করতে হবে। সেই প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল নেত্রীকে অমিতের খোঁচা, ‘‘এক সময় তৃণমূলের কর্মীরা মা মাটি মানুষ স্লোগান দিয়ে তৃণমূলে এসেছিলেন। কিন্তু দিদি, আপনি সেই স্লোগানকে তোলাবাজির স্লোগান, ভাইপোবাদের স্লোগানে পরিণত করেছেন। আমপানের টাকা আপনার দলের লোকেরা খেয়ে নিয়েছে। এখন হাইকোর্ট নির্দেশ দিচ্ছে, সেই টাকায় দুর্নীতি হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে।’’ অমিতের প্রশ্ন, ‘‘এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু আছে?’’
অমিত শাহের বক্তব্য:
আরও পড়ুন: শাহি সভায় যাওয়ার পথে রাজ্যবাসীকে খোলা চিঠি শুভেন্দুর
‘আয়ূষ্মান ভারত’, ‘প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান নিধি’র মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্প এ রাজ্যে কার্যকর না করা নিয়েও সরব হন অমিত। প্রশ্ন তোলেন, ‘‘বাংলায় কেন কৃষকদের প্রকল্প চালু হল না। এ রাজ্যের গরিব মানুষ কি কেন্দ্রের টাকা পেতে চান না? দিদি আপনাকে জবাব দিতেই হবে।’’
বিজেপিকে এক বার এ রাজ্য শাসনের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অমিত বলেন, ‘‘আপনারা কংগ্রেসকে ৩ দশক দিয়েছেন। বামেদের ৩৪ বছর শাসন করতে দিয়েছেন। আর দিদিকে ১০ বছর দিয়েছেন। আমাদের ৫ বছরের জন্য সুযোগ দিন। বাংলাকে সোনার বাংলা করে দেখাব আমরা।’’