—ফাইল চিত্র।
চলতি মাসের মধ্যেই বাংলায় বামেদের সঙ্গে জোটের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যাক, চাইছেন সনিয়া গাঁধী। কংগ্রেস সভানেত্রীর ওই বার্তা প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে দিয়েছে এআইসিসি। অন্য দিকে, সিপিএম চাইছে আসন-রফা সেরে ফেলে প্রার্থী তালিকা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত করে ফেলতে। যাতে ব্রিগেড সমাবেশের সময়ে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেওয়া যায়। কংগ্রেসের পদক্ষেপের জন্যই অপেক্ষা করে রয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।
বামেদের সঙ্গে জোটে আগেই সম্মতি দিয়েছে এআইসিসি। কিন্তু রাজ্যে তারা কোথায় কত আসনে লড়তে চায়, তার তালিকা এখনও তৈরি করতে পারেনি প্রদেশ কংগ্রেস। সেই কারণেই বাম নেতৃত্ব বারবার অনুরোধ জানালেও কংগ্রেস নেতারা এখনও আসন-রফা নিয়ে কথা শুরু করতে পারেননি। এমতাবস্থায় এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপাল এবং রাজ্যে এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক জিতিন প্রসাদ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও প্রদেশ সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্যকে সভানেত্রীর বার্তা জানিয়ে দিয়েছেন। এআইসিসি-র বক্তব্য, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে জোটের প্রক্রিয়া সেরে ফেলতে হবে। যাতে ফেব্রুয়ারির গোড়া থেকেই জোটবদ্ধ ভাবে নির্বাচনী ময়দানে নেমে পড়া যায়।
বিরোধী দলনেতা মান্নান ও সাংসদ প্রদীপবাবু ইতিমধ্যে একাধিক বার ফোনে ও মুখোমুখি বসে বাম নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তবে কিছু যৌথ কর্মসূচি ঠিক হলেও আসন ভাগের বিষয়ে তাঁরা কথা শুরু করতে পারেননি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবু ব্যাখ্যা দিয়েছেন, সব জেলা থেকে আসনের তালিকা পেলে রাজ্য স্তরে তাঁরা আলোচনা করে দলীয় অবস্থান ঠিক করবেন এবং বামফ্রন্টকে জানাবেন। এই পরিস্থিতিতেই মান্নান ও প্রদীপবাবুকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছিল এআইসিসি। তাঁরা সর্বশেষ পরিস্থিতির কথা জানিয়ে এসেছেন। সূত্রের খবর, বাংলার জন্য নিযুক্ত তিন সিনিয়র পর্যবেক্ষক বি কে হরিপ্রসাদ, আলমগির আলম ও বিজয় ইন্দ্র সিংলার উপস্থিতিতে প্রদেশ নেতাদের নিয়ে দিল্লিতে বৈঠকও করতে পারে এআইসিসি।
আরও পড়ুন: অভিষেকের থেকেও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কম দিলীপের, বললেন সৌগত
আরও পড়ুন: ‘বিজয়’ যজ্ঞে ২২০ আসন প্রার্থনা করলেন বীরভূমের কেষ্ট
জোট নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলে রেখেছেন, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের প্রক্রিয়া এগোচ্ছে। তবে মাঝখানে ওদের প্রদেশ সভাপতির ( সোমেন মিত্র) মৃত্যুতে বিষয়টিতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তবে আমরা আশাবাদী, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ নাগাদ আসন-রফা করে ফেলতে পারব। ফেব্রুয়ারি মাসেই আমরা নির্বাচনী সভার দিকে এগোব।’’ ঠিক এই কথাই প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বকে বলেছে এআইসিসি।
গত লোকসভা ভোটে বাম ও কংগ্রেসের আসন সমঝোতা ভেস্তে গিয়েছিল। কিন্তু লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের জয়ী দুই সাংসদ অধীরবাবু ও আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরীর জন্য কলকাতায় সংবর্ধনা সভার মঞ্চ থেকেই ২০২১ সালের জন্য জোট গড়ে এগোনোর ঘোষণা করে দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রদেশ সভাপতি সোমেনবাবু এবং এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক গৌরব গগৈ। এর পরে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর জন্মের দেড়শো বছর পূর্তি উপলক্ষে বিধান ভবনে আয়োজিত প্রদর্শনীতে কংগ্রেসের আমন্ত্রণ পেয়ে গিয়েছিলেন বিমানবাবু, সূর্যকান্ত মিশ্র-সহ বামফ্রন্ট নেতারা। জোটের প্রক্রিয়া শুরু তখন থেকেই, যা এখনও সম্পূর্ণ হওয়ার অপেক্ষায়!