আজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কলকাতা থেকে ছ’টি শহরের বিমান পরিষেবা। তার আগে রবিবার কলকাতা বিমানবন্দর থেকে উড়ান। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
করোনার প্রাদুর্ভাবের দরুন রাজ্যের তরফে কেন্দ্রের কাছে যে-চিঠি পাঠানো হয়েছিল, তাতে পশ্চিমবঙ্গের সব বিমানবন্দর থেকেই উড়ান বন্ধ রাখার আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু বাগডোগরা থেকে উড়ান বহাল থাকছে। কলকাতা থেকে দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই-সহ ছ’টি শহরের উড়ান আজ, সোমবার সকাল থেকে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে ১৯ জুলাই পর্যন্ত।
বিকল্প হিসেবে শনিবারেই দুর্গাপুরের অণ্ডাল থেকে দিল্লি, মুম্বই ও চেন্নাইয়ে উড়ান চালানোর অনুমতি চেয়েছিল স্পাইসজেট। ওই উড়ান সংস্থার যুক্তি, কেন্দ্র শনিবার নির্দেশ দিয়েছে, ছ’টি শহর থেকে কলকাতার উড়ান বন্ধ থাকবে। অণ্ডালের কথা তো বলেনি। কিন্তু অণ্ডাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ স্পাইসজেটকে উড়ান চালাতে দিতে রাজি হননি।
বাগডোগরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা সুব্রহ্মণ্যম পি রবিবার জানান, বাগডোগরা থেকে নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী দিল্লি, মুম্বইয়ের উড়ান চলবে। তাঁর কথায়, ‘‘বাগডোগরা থেকে উড়ান বন্ধের নির্দেশ যে-হেতু আসেনি, তাই উড়ান চলবে। এই মুহূর্তে বাগডোগরা থেকে দিল্লির চারটি এবং মুম্বইয়ের একটি উড়ান চলছে।’’
অণ্ডাল থেকে এমনিতেই কোনও উড়ান চলছিল না। কিন্তু বাগডোগরা ও কলকাতা থেকে নিয়মিত উড়ান চলছিল। এই প্রেক্ষিতে শনিবার বিমান মন্ত্রক থেকে আসা নির্দেশে শুধু কলকাতা থেকে উড়ান বন্ধের কথা বলা হয়। তাতে বাগডোগরা বা অণ্ডালের কোনও উল্লেখ ছিল না। তখনই স্পাইসজেট অণ্ডাল থেকে উড়ান চালাতে দেওয়ার আর্জি জানায়। ওই সংস্থার এক কর্তা জানান, কলকাতা থেকে দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাইয়ে যাওয়ার টিকিট যাঁদের রয়েছে, তাঁরা চাইলে সেই টিকিটেই অণ্ডাল থেকে যেতে পারতেন। তাঁদের শুধু সড়কপথে অণ্ডাল পর্যন্ত যেতে হত। একই ভাবে দিল্লি-মুম্বই-চেন্নাই থেকে কলকাতায় আসতে ইচ্ছুক যাত্রীরা অণ্ডালে নেমে সড়কপথে কলকাতায় পৌঁছে যেতে পারতেন।
এ দিকে, রবিবার সন্ধ্যায় দুবাই থেকে বন্দে ভারত প্রকল্পের অধীনে ইন্ডিগোর উড়ানে ১৭৪ জন যাত্রী কলকাতায় এসেছেন। কলকাতায় বন্দে ভারত উড়ানের আগমন নিয়েও আপত্তি জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। তারা জানিয়েছিল, বিদেশ থেকে আসতে ইচ্ছুক প্রত্যেক যাত্রীর কাছে কলকাতার হোটেলের (বাধ্যতামূলক নিভৃতবাসের জন্য) সাত দিনের বুকিংয়ের প্রমাণপত্র থাকতে হবে। কেন্দ্র সেটা নিশ্চিত করলে তবেই কলকাতায় বন্দে ভারতের উড়ান আসতে দেওয়া হবে। সেই জন্য ২ জুলাই থেকে বন্ধ ছিল ওই উড়ান।
বিমনবন্দর সূত্রের খবর, এখন নির্দিষ্ট আবেদনের ভিত্তিতে উড়ান আসার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন দেশে আটকে পড়া মূলত বাঙালিরা (যাঁরা বিমান ভাড়া করে কলকাতায় ফিরতে চাইছেন) বিদেশ থেকে রওনা হওয়ার আগেই কলকাতার হোটেলে সাত দিনের বুকিংয়ের টাকা জমা দিচ্ছেন। তবেই রাজ্য এখানে আসার জন্য অনুমতি দিচ্ছে। ওঁরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিমান ভাড়া করে আসছেন। রবিবার যাঁরা ফিরেছেন, তাঁরাও ইন্ডিগোর ওই বিমান ভাড়া করে এসেছেন। আর যাঁরা বিদেশের অন্য শহরে আটকে রয়েছেন, তাঁরাও একই পদ্ধতিতে কলকাতায় ফিরতে পারবেন, এমন আশা দেখা দিয়েছে।