আন্দামানের সেলুলার জেলে ধাঁচেই আলিপুর সংশোধনারে ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ শো হবে। ফাইল চিত্র।
দেশের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এক অভিনব প্রকল্প নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। আন্দামানের সেলুলার জেলের ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ শোয়ের নাম বিশ্বজো়ড়া। যেখানে শব্দ ও আলোর মোড়কে তুলে ধরা হয় ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের বীর বিপ্লবীদের সংগ্রামী ইতিহাস। এ বার সেই ধাঁচে আলিপুর সংশোধনাগারে তৈরি হতে চলেছে এক ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ শো। এই কাজে হাত লাগিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন ও হিডকো। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলেই হেরিটেজ কমিশন সূত্রে খবর।
প্রায় ৪০ মিনিট দৈর্ঘ হবে এই ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ অনুষ্ঠানটির। বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় সাজানো হবে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের অমর কীর্তি। এই শোয়ের ভাষ্যপাঠে শোনা যাবে খ্যাতনামা গীতিকার জাভেদ আখতারের কণ্ঠ। ব্যবহার করা হবে এলইডি লাইড, এলইডি ওয়াল ওয়াসারস, লেজার লাইট, ডিমার, এলইডি ফ্লাড লাইট ও লেজার হাউজিং প্রোটেকশন কভার। এই শো-কে অভিনত্ব দিতে ধ্বনির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে, মিক্সার অডিও, অডিও রাকেস ও ডিজিটাল সিগন্যাল প্রসেসর।
আলিপুর সংশোধনাগারটি মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরের মধ্যেই পড়ে। তাই ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’-সহ জেল সংরক্ষণের পরিকল্পনাটি দেখানো হয়েছিল তাঁকে। তিনি সিলমোহর দেওয়ার পরেই এ বিষয়ে যাবতীয় কাজকর্ম শুরু হয়। নবান্নের এক কর্তা জানিয়েছেন, সবকিছু সময় মতো শেষ হলে নতুন বছরের প্রথম দিনেই সাধারণ মানুষের জন্য খোলা হতে পারে নবরূপে সেজে ওঠা আলিপুর সংশোধনাগারের ফটক।
প্রশাসন সূত্রে খবর, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মৃতি বিজড়িত আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’- হিসেবে গড়ে তুলতে চায় রাজ্য। এখানকার বন্দিদের বারুইপুর সংশোধনাগারে স্থানান্তরের পরে আপাতত পুরো জেলখানাই পরিত্যক্ত পড়েছিল। অথচ এই জেলেই এক সময় স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে বন্দি ছিলেন জহওরলাল নেহরু, চিত্তরঞ্জন দাস, সুভাষচন্দ্র বসুরা। স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁদের অবদানের কথা এই লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। তেমনই নতুন এই প্রকল্পে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিভিন্ন সেলকে সংরক্ষণের আওতায় আনা হবে। যে ফাঁসির মঞ্চে বিপ্লবীদের ফাঁসি দেওয়া হত, তাও থাকবে সংরক্ষণের আওতায়। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁদের ভুমিকার কথা যাতে আগামী প্রজন্ম জানতে পারে, সেই কারণেই এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন হেরিটজ কমিশনের ওই সদস্য।