মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাইজর দলের নেতা অখিল গগৈ।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে সরাসরি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে অসমের রাইজর দলের প্রধান অখিল গগৈকে যোগদানের জন্য। কিন্তু, তাঁর নেতৃত্বাধীন রাইজর দল বিকল্প ভাবনা ভাবতে শুরু করেছে। খবর, সরাসরি যোগদানের বদলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সঙ্গে জোট গড়ে একটি বিজেপি বিরোধী ফ্রন্ট তৈরি করতে চাইছেন তাঁরা। দেশের সমস্ত আঞ্চলিক দলকে সেই ফ্রন্টে শামিল করে ২০২৪ সালে নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতাচ্যুত করাই তাঁদের লক্ষ্য হবে বলে জানিয়েছেন রাইজর দলের এক নেতা। তাই সরাসরি কোনও দলে যোগ দেওয়ার চেয়ে অন্য আঞ্চলিক দলকে নিয়ে ফ্রন্ট গড়তেই বেশি আগ্রহী রাইজর দলের নেতৃত্বের একাংশ।
অসমের রাজনীতিতে অতি পরিচিত নাম অখিল। নাগরিক সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। তাঁর ১৯ মাসের কারাবাস কারও অজানা নয়। তাই অখিলকে অসম প্রদেশ তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কালীঘাটের পক্ষ থেকে। শনিবার কলকাতায় এসে তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গিয়েছেন অখিল। এর আগেও কলকাতায় দু'দফা বৈঠক হয়েছে দু'পক্ষের মধ্যে। আবার রবিবার অসমের প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতিদের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে তাঁদের। তাই সব রাজনৈতিক পক্ষকেই বাজিয়ে দেখছে রাইজর দল। অসমে পাঁচটি বিধানসভায় উপনির্বাচন হবে। সেই উপনির্বাচন থেকেই সব রাজনৈতিক দলকে এক ছাতার তলায় এনে বিজেপি বিরোধী মঞ্চ হিসেবে ফ্রন্টটির পথচলা শুরু হোক, এমনটাই চাইছে রাইজর দলের একাংশ।
দলের নেতারা অখিলকে এ বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করতে বলেছেন। রাইজর দলের এমন ভাবনা প্রসঙ্গে অসমের রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, তৃণমূল একটি বাংলাভাষী দল আর অখিলের জনপ্রিয়তা অসমে বেশ চোখে পড়ার মতো। তাই রাইজর দল নিজের অস্তিত্ব মুছে তৃণমূলের সঙ্গে মিশে গেলে ভুল বার্তা যেতে পারে রাজ্যের অসমের মানুষদের মধ্যে। সে কারণে নিজেদের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব বজায় রেখে তৃণমূল-সহ অন্যান্য আঞ্চলিক শক্তির সঙ্গে সমঝোতা করে ভোটে লড়তে চান তাঁরা। তাতে যেমন অসমের মানুষদের জনসমর্থন হারানোর সম্ভাবনাও কম থাকবে, তেমনই বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক লড়াইয়ে বিরোধী শক্তিকে একজোট করার বার্তাও দেওয়া যাবে। রাইজর দলের এক নেতার কথায়, "অসমের রাজনীতিতে যাতে স্থানীয় মানুষের গুরুত্ব না কমে যায়, আমাদের সে কথা ভাবতে হবে। তৃণমূল যেমন আমাদের প্রস্তাব দিয়েছে, তেমনই কংগ্রেসের মতো জাতীয় দল আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে। দ্রুতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক না কেন নিজেদের স্বতন্ত্র অস্তিত্বের কথা সবার আগে আমাদের মাথায় রাখতে হবে।"