—ফাইল চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ আগেই উঠেছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। এ বার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জন্য অভিষেকের জীবন ‘বিপন্ন’ হতে বসেছে বলে অভিযোগ তুললেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, অমিতের নির্দেশেই সারাক্ষণ অভিষেকের সঙ্গে ছায়ার মতো লেগে রয়েছে বিজেপি-র গুন্ডারা। চার পাশ থেকে গুন্ডারা ঘিরে ধরায় অভিষেকের জীবন ‘বিপন্ন’ বলেও দাবি করেন মমতা।
ত্রিপুরা থেকে ফেরা আহত নেতানেত্রীরদের দেখতে সোমবার এসএসকেএম যান মমতা। উডবার্ন ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে বিজেপি এবং সরাসরি অমিতকে গোটা ঘটনার জন্য দায়ী করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশেই গোটা ঘটনা ঘটেছে। নইলে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর অত সাহস হতে পারে না।’’
সম্প্রতি ত্রিপুরায় দলের কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে আক্রান্ত হন অভিষেক। লাঠি, বাঁশ নিয়ে বিজেপি কর্মীরা তাঁর গাড়িতে হামলা করেন বলে অভিযোগ। সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতা সোমবার বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় অভিষেক যাওয়ার পর যে ভাবে ওর গাড়িতে মারা হয়েছে, তাতে ওর মাথায় আঘাত লাগতে পারত। পরে প্রশাসনের তরফে বুলেটপ্রুফ গাড়ি দেওয়া হয়েছিল। এমনি গাড়ির কাচ হলে চুরমার হয়ে যেত। সঙ্গে চুরমার হয়ে যেতে পারত ওর মাথাও। আর সবটাই পুলিশের সামনে হয়েছে। নানা রকম পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অভিষেক বিমানে কোথাও গেলে, ওর পাশের পাঁচটা আসন বুক করে গুন্ডা তুলে দেওয়া হচ্ছে। অভিষেকের জীবন বিপন্ন।’’
এর আগে নির্বাচনের সময়ও অভিষেককে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল মমতাকে। তাঁর ভাইপো বলে অভিষেককে আক্রমণ করা হয় বলে সে সময়ও অনুযোগ করেছিলেন মমতা। শুধু তাই নয়, গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে অভিষেককে মেরে ফেলার চেষ্টা হয়েছে, তাতে প্রাণে বেঁচে গেলেও অভিষেকের একটা চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন মমতা।
তবে প্রাক নির্বাচনী মমতার সেই অনুযোগের সঙ্গে সোমবারের মন্তব্যের মধ্যে বিস্তর ফারাক আছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এর আগে পেগাসাস-কাণ্ডে অভিষেকের ফোনে আড়ি পাতার বিষয়টি সামনে এলে সে বারও সরাসরি অমিতের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন মমতা। এ বারও অভিষেকের নিরাপত্তার প্রশ্নে সরাসরি অমিতকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, মমতা এবং অভিষেক দিল্লিতে থাকাকালীনই ত্রিপুরার পরিস্থিতি ঘোরালো হতে শুরু করে। ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের হয়ে জমি পরখ করতে গিয়ে সেখানে বন্দি হন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার কর্মীরা। তার পরই দিল্লি থেকে ফিরে ত্রিপুরা ছুটে যান অভিষেক। সেখানে বিজেপি-কে এক ইঞ্চি জমিও ছেড়ে দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি।
তার পর দলের যুব নেতানেত্রীরা আক্রান্ত এবং গ্রেফতার হওয়ায় রবিবার ফের সেখানে যান অভিষেক। দিনভর থানায় ধর্না দিয়ে বসে থেকে জামিন পাওয়া আহতদের সঙ্গে নিয়ে রাতে কলকাতা ফিরে আসেন তিনি। এই গোটা পর্বে নিজেকে ত্রিপুরা-কাণ্ড থেকে সরিয়ে রেখেছিলেন মমতা। কিন্তু অভিষেকের প্রসঙ্গে ফের কেন্দ্রের সঙ্গে সরাসরি সঙ্ঘাতে নামলেন তিনি।