বাইরন বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র।
ইঙ্গিত ছিল যে, আরও দীর্ঘায়িত হবে তল্লাশিপর্ব। রাত্রিবাস করার প্রস্তুতি হিসাবেই আয়কর আধিকারিকদের জন্য এসেছিল কম্বল-বালিশও। তবে বুধবার গভীর রাতে সাগরদিঘির বিধায়ক বাইরন বিশ্বাসের বাড়ি ছাড়লেন আয়কর কর্তারা। তল্লাশির শেষে ৭২ লক্ষ টাকা নগদ এবং বেশ কিছু নথি উদ্ধার হয়েছে বলে আয়কর দফতর সূত্রে খবর। ওই টাকা এবং নথি আয়কর কর্তারা বাজেয়াপ্ত করেছেন বলে ওই সূত্রের খবর।
বুধবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে বাইরনের বাড়ি এবং বহু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হানা দেন আয়কর আধিকারিকেরা। বাইরনের শমসেরগঞ্জের বাড়ির পাশাপাশি, তাঁর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতালেও অভিযান চালানো হয়। বিধায়কের বাড়ি ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আয়কর দফতর সূত্রে জানা যায়, বাইরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলির হিসাবরক্ষকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাঁর পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বিধায়কের বাবা বাবর বিশ্বাসকেও। তার পর দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বাইরনকে। বেশ কিছু টাকা এবং নথি উদ্ধার করা হয়। কিন্তু মাঝে দু’বার অসুস্থ হয়ে পড়েন বাইরন। সন্ধ্যার পর কংগ্রেসত্যাগী, অধুনা তৃণমূল বিধায়কের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাত ৯টা নাগাদ তাঁকে তাঁর নিজের নার্সিংহোমেই ভর্তি করানো হয়। তার পর বিধায়ক খানিক সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলে তাঁকে আর এক প্রস্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল, আয়কর আধিকারিকদের রাত্রিবাসের জন্য বিধায়কের মালিকানাধীন স্কুলেই আয়োজন করা হচ্ছে। কিন্তু রাত ১টা ১০ মিনিট নাগাদ তিনটি গাড়িতে বিধায়কের বাড়ি ছাড়েন আয়কর আধিকারিকরা। দীর্ঘ তল্লাশি অভিযানে কী কী জিনিস উদ্ধার হল, তা নিয়ে আয়কর কর্তারা মুখে কুলুপ আঁটলেও কেন্দ্রীয় ওই সংস্থার সূত্র মারফত জানা যায়, নগদ ৭২ লক্ষ টাকা এবং বেশ কিছু ভুয়ো সংস্থার ‘নথি’ উদ্ধার করার পর সেগুলি বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে গিয়েছেন আধিকারিকেরা। এই বিষয়ে দু’এক দিনের মধ্যে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছে ওই সূত্রটি। তবে এই প্রসঙ্গে বাইরন বৃহস্পতিবার সকালে আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “ব্যবসার প্রয়োজনে এবং বিড়ি শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার জন্য কিছু নগদ বাড়িতে রাখতে হয়। এই টাকার কোনওটাই অবৈধ নয়।”