বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
বুধবার লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন দু’জন আচমকা ঢুকে পড়ায় সাংসদদের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। সঙ্গে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কী ভাবে এত বড় রকমের গলদ থেকে গিয়েছে, তা নিয়েও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির প্রশ্নের মুখে পড়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই হানার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় একগুচ্ছ কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার বিধানসভায় নিরাপত্তা নিয়ে একটি বৈঠক করেন তিনি। তারপরেই নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে স্পিকার বলেন, ‘‘গতকাল লোকসভায় কিছু বাইরের মানুষ ঢুকে পড়েছিলেন, তাঁদের কাছে ভিজিটাল স্লিপ ছিল। তাঁরা ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছেন লোকসভায়। সেই ঘটনার পর আমরা অত্যন্ত শঙ্কিত হয়ে পড়েছি। আমাদের বিধানসভায় যাতে বাইরের কোনও লোক ঢুকে পড়ে এই ধরনের গোলমাল না করতে পারেন, বা আমাদের যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে তাকে যেন কোনওরকম ব্যতিব্যস্ত না করতে পারেন, সেই কারণে আমি আমাদের বিধানসভার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্তা ব্যক্তিদের নিয়ে একটি বৈঠক করেছি।’’
এই পদক্ষেপ প্রসঙ্গে বিমান বলেছেন, ‘‘যাঁরা বিধানসভার সদস্য রয়েছেন তাঁদের নিজেদের পরিচয়পত্র নিয়ে বিধানসভায় ঢুকতে হবে। বিধায়কদের সঙ্গে যে ভিজিটার্সরা আসবেন তাঁদের জন্য আমরা পৃথক বন্দোবস্ত করব। তাঁদের ছবি তোলা হবে এবং তাদের পরিচয় যাচাই করার পর বিধানসভায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। যাঁরা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন তাঁদের শিফটিং ডিউটির মাধ্যমে মোতায়ন করা হবে সেই বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।’’ বিধায়ক ও বিধানসভায় আগত অতিথিদের জন্য পৃথক দরজা দিয়ে ঢোকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন স্পিকার। তিনি বলেন, ‘‘বিধায়কদের এ বার থেকে উত্তর গেট দিয়ে বিধানসভায় প্রবেশ করতে হবে। আর যেসব অতিথি তাঁদের সঙ্গে আসবেন তাঁরা বিধানসভা পশ্চিম গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন।’’ সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র নিয়েই বিধানসভায় ঢুকতে হবে বলে জানিয়েছেন স্পিকার।
উল্লেখ্য বুধবার লোকসভায় মাইসুরুর বিজেপি সাংসদের স্বাক্ষর করা স্লিপ নিয়ে লোকসভার গ্যালারিতে প্রবেশ করেন একজন যুবক ও যুবতী। অধিবেশন চলাকালীন তাঁরা গ্যালারি থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েন লোকসভার অন্দরে। কয়েকজন সাংসদ গিয়ে তাঁদের পাকড়াও করেন। তার আগেই তাঁরা কালার স্মোক ক্র্যাকার ছড়িয়ে দেন লোকসভার অধিবেশন কক্ষে। পরে তাঁদের সেখান থেকে নিয়ে যায় দিল্লি পুলিশ। কিন্তু এমন ঘটনার পর বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। সেই আলোচনার ফলস্বরূপ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে একাধিক পদক্ষেপ করলেন।