(বাঁ দিক থেকে) মুকুল রায়, কৃষ্ণ কল্যাণী, সুমন কাঞ্জিলাল। —ফাইল চিত্র।
সব ঠিকঠাক চললে, পরবর্তী পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান (পিএসি) হতে পারেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। বিধানসভা সূত্রে এমনটাই খবর। পিএসির চেয়ারম্যান পদ নিয়ে বিবাদের জেরে বিধানসভায় স্পিকারের ডাকা কোনও বৈঠকে যোগদান করেন না বিজেপি বিধায়কেরা। সুমনের আগে এই কমিটির চেয়ারম্যান পদে ছিলেন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করা বিধায়ক মুকুল রায় ও কৃষ্ণ কল্যাণী। ১০ মার্চ ব্রিগেড সমাবেশে রায়গঞ্জ লোকসভা থেকে কৃষ্ণের নাম তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই মনোনয়ন দাখিলের আগে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন কৃষ্ণ। তাই সেই শূন্যপদে বসানো হচ্ছে আলিপুরদুয়ারের বিধায়ককে। যিনি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রতীকে জয়লাভ করেছিলেন। ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেকের হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করেন তিনি।
বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, সুমনকেই পরবর্তী পিএসির চেয়ারম্যান পদে বসানোর সিদ্ধান্ত পাকা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সুমন লোকসভা নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত। আগামী ১৯ এপ্রিল প্রথম দফায় ভোট আলিপুরদুয়ার লোকসভায়। ওই লোকসভার অধীন সুমনের বিধানসভা কেন্দ্র। প্রচার কর্মসূচিতে ধারাবাহিক ভাবে অংশ নিতে হচ্ছে তাঁকে। ১৯ তারিখে ভোট পর্ব মিটে গেল সুমন কলকাতায় আসবেন। সেই সময় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব দেবেন বলে বিধানসভা সূত্রে খবর। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ হতে পারে বলে মনে করছেন বিধানসভার আধিকারিকেরা। সুমনকে নতুন এই দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। তবে দলবদলু বিধায়ককে ফের এই পদে বসানোর সিদ্ধান্তের পর কটাক্ষ করেছে বিজেপি পরিষদীয় দল। তাঁদের কথায়, তৃণমূল যে অসাংবিধানিক দল, তা আবার প্রমাণিত হয়ে গেল। গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুযায়ী পিএসি কমিটি বিরোধী দলের পাওয়া উচিত। লোকসভায় বিরোধী দল না হয়েও কংগ্রেস সেই মর্যাদা পায়। সেখানে পিএসির চেয়ারম্যান বহরমপুর লোকসভা থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। আর এখানে কখনও মুকুল, কখনও কৃষ্ণ, আবার কখনও সুমনকে দল ভাঙিয়ে নিয়ে গিয়ে চেয়ারম্যান করা হয়। যা সংসদীয় রাজনীতিতে লজ্জার।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে বিজেপির প্রতীকে জেতেন মুকুল। জয়ের এক মাসের মধ্যেই দলবদল করে তৃণমূলে চলে যান তিনি। তারপর তাঁকে পিএসির চেয়ারম্যান করা হয়। পরে তিনি নিজে ওই পদ থেকে পদত্যাগ করলে রায়গঞ্জ থেকে বিজেপির প্রতীকে জয়ী আরও এক বিধায়ক কৃষ্ণকে এই পদে বসানো হয়েছিল। সেই কৃষ্ণ এ বার লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ায় বিধানসভার সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তাই এ বার বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসা আরও এক বিধায়ককে সেই কমিটির চেয়ারম্যান পদে বসানো হতে পারে।