বিধানসভায় বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে তাঁর সামনেই বসে রয়েছেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশে রয়েছেন রায়াত হোসেন সরকারও (ছবিতে দেখা য়াচ্ছে না)। মঙ্গলবার। — নিজস্ব চিত্র।
রাজভবন থেকে শপথগ্রহণের আমন্ত্রণের চিঠি পেয়েছিলেন দুপুরে। বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূলের দুই প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রায়াত হোসেন সরকার বিকেলেই এসে হাজির হলেন রাজ্যের স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুয়ারে। সূত্রের খবর, স্পিকারের কাছে তাঁরা জানতে চান, এখন তাঁদের কী করণীয়? রাজ্যের বিধায়ক হিসাবে শপথ গ্রহণ করতে কি তবে রাজভবনেই যেতে হবে তাঁদের? নাকি তাঁদের ইচ্ছা অনুযায়ী বিধানসভাতেই হবে শপথগ্রহণ?
বরাহনগর এবং ভগবানগোলা বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন সায়ন্তিকা এবং রায়াত। গত ৪ জুন ফল প্রকাশের পর ২১ দিন কেটে গেলেও বিধায়ক হিসাবে শপথ নিতে পারেননি তাঁরা। কারণ তাঁদের শপথগ্রহণ নিয়ে জটিলতা বেড়েই চলেছে। রায়াত ও সায়ন্তিকা কোথায় শপথ নেবেন তা নিয়ে টানাপড়েন চলছে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে। এক দিকে রাজভবনের তরফে বিধানসভাকে অবগত না করে সরাসরি চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয় সায়ন্তিকা এবং রায়াতকে। সেই ঘটনার পরে ক্ষুব্ধ বিমান একটি চিঠি দিয়ে রাজ্যপালকে মনে করিয়ে দেন ‘সাংবিধানিক নিয়ম’-এর কথা। তার পর থেকে চিঠি এবং পাল্টা চিঠির ঠান্ডা লড়াই চলছে।
স্পিকার বিমানের চিঠির পরে সায়ন্তিকারাও রাজ্যাপালকে চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে তাঁরা জানান, বিধায়কের শপথ তাঁরা রাজভবনে নিতে চান না। বরং যে বিধানসভার অধ্যক্ষের অধীনে তাঁরা ভবিষ্যতে কাজ করবেন, বিধানসভায় দাঁড়িয়ে তাঁর কাছেই শপথ পাঠ করতে চান। যদিও সায়ন্তিকাদের সেই আবেদন গৃহীত হয়নি।
বরং মঙ্গলবার সকালে রাজভবনের তরফে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলের একটি পোস্টে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, রাজ্যের বিধায়কদের শপথ গ্রহণের ব্যাপারে রাজ্যপালই শেষ কথা বলবেন।
রাজভবনকে চিঠি দিয়ে সাংবিধানিক নিয়ম স্মরণ করিয়েছিলেন বিমান। ওই পোস্টে পাল্টা রাজভবনও বিমানের সমালোচনা করে তাঁকে সংবিধানের বিধান স্মরণ করিয়েছে। সেই সঙ্গে অভিযোগ করেছে, সংবিধান এবং আদালতের বহু নির্দেশ এ ব্যাপারে রাজভবনের ক্ষমতাকে প্রাধান্য দিলেও বিধানসভা সেই ক্ষমতাকে অবজ্ঞা করেছে।
এর পরেই সায়ন্তিকা ও রায়াতকে ইমেলে চিঠি পাঠানো হয় রাজ্যপালের তরফে। রাজভবন সূত্রে খবর, ওই চিঠিতে তৃণমূলের দুই জয়ী প্রার্থীকে বলা হয়েছে, বুধবার দুপুরেই রাজভবনে এসে শপথ নিতে হবে। চিঠি পাওয়ার কথা আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে স্বীকারও করেছিলেন সায়ন্তিকারা। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিকেল ৪টে নাগাদ এসে হাজির হন বিধানসভায় স্পিকার বিমানের ঘরের সামনে।
শেষ পর্যন্ত সায়ন্তিকাদের পরবর্তী কর্তব্য নিয়ে কী পরামর্শ দেন বিমান, সে দিকেই থাকবে নজর।