শওকত মোল্লা-আরাবুল ইসলাম। —ফাইল ছবি।
তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাদিবসে পতাকা তুলতে গিয়ে ‘আক্রান্ত’ ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম এ বার দলেরই বিধায়ক শওকত মোল্লার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেন। বিধায়ক শওকতের নির্দেশেই তাঁর উপর বুধবার হামলা চালানো হয় বলে ভাঙ্গড়-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরাবুল পোলেরহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিখিত অভিযোগপত্রে দুষ্কৃতী তালিকায় স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান শেখ সাবির আলি, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মোমিনুল ইসলাম এবং বেশ কয়েক জন পঞ্চায়েত সদস্যের নাম উল্লেখ করেছেন আরাবুল। এঁরা সকলেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা। অভিযোগপত্রে নিজের প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করে আরাবুল লিখেছেন, ‘‘এই সমস্ত দুষ্কৃতী যখন-তখন আমার উপরে আক্রমণ করতে পারে। সেই জন্য আমি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।’’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি হামলার আশঙ্কা থেকে হাইকোর্টে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদনও করেছিলেন ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল। ভাঙড় তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, আরাবুলের বিরুদ্ধে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের কাছে পাল্টা অভিযোগ জানাতে চলেছেন বিধায়ক শওকত। তাঁর শিবিরের অভিযোগ, আরাবুল দলের ক্ষতি করছেন। প্রসঙ্গত, তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাদিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে পতাকা উত্তোলন করতে যাচ্ছিলেন ভাঙড়ের ‘তাজা নেতা’ আরাবুল। কিন্তু দলীয় পতাকা উত্তোলন নিয়ে তৃণমূলের দুই পক্ষের মধ্যে অশান্তির সূত্রপাত। জানা যাচ্ছে, বিবাদে জড়ান আরাবুলের অনুগামীরা এবং ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক তথা ভাঙড়ের তৃণমূল পর্যবেক্ষক শওকতের অনুগামীরা।
আরাবুলের অনুগামীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেন শওকতের লোকজন। সেই ‘রোষ’ গিয়ে পড়ে আরাবুলের গাড়িতে। পোলেরহাট এলাকায় আরাবুলের গাড়ি লক্ষ্য করে কয়েক জন পাথর ছোড়েন বলে অভিযোগ। গাড়ির পিছনের কাচ ভেঙে যায়। ওই ঘটনার পরে রাস্তা আটকে দুই পক্ষ মারামারি শুরু করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। বেশ কিছু ক্ষণ পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর বিতর্কে জড়িয়েছিলেন ভাঙড়ের ‘তৎকালীন দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ তৃণমূল নেতা আরাবুল। ভাঙড় কলেজে ওয়েবকুটার প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি আরাবুলের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন ভূগোলের শিক্ষিকা দেবযানী দে। অভিযোগ, দু’তরফের মধ্যে বচসা চলাকালীন আচমকা ওই শিক্ষিকাকে লক্ষ্য করে প্লাস্টিকের জগ ছুড়ে মেরেছিলেন আরাবুল। তবে সম্প্রতি অপরাধের মামলায় জেল খেটে জামিনে মুক্তির পরে আরাবুল দলের অন্দরেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন বলে তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর।