সন্দেশখালিতে প্রবেশ করার জন্য রয়েছে পাঁচটি ঘাট। মঙ্গলবার সকালে সেই পাঁচটি ঘাটেই ১৪৪ ধারা জারি করে দিল প্রশাসন। এর ফলে আদালতের অনুমতি নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপি বিধায়করা কী করে সন্দেশখালি প্রবেশ করবেন, তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবার সন্দেশখালি অভিমুখে যাত্রা করেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাটও। তাঁকে ধামাখালিতে আটকে দেয় পুলিশ। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন সিপিএম নেত্রী। আটকে দেওয়া হয় শুভেন্দু-সহ ছ’জনকেও।
সন্দেশখালিতে ঢোকার জন্য রয়েছে মোট পাঁচটি ঘাট। ধামাখালি ঘাট, সন্দেশখালি ঘাট, ভোলাখালি ঘাট, খুলনা ঘাট এবং জেলেখালি ঘাট— এই পাঁচটি ঘাটেই মঙ্গলবার সকালে নতুন করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ধামাখালিতে আটকে দেওয়া হয় শুভেন্দুদের। পুলিশকে শুভেন্দু জানান, তাঁর সঙ্গে আদালতের দেওয়া ছাড়পত্র রয়েছে। তাও কেন তাঁদের সন্দেশখালি ঢুকতে দেওয়া হবে না? বিরোধী দলনেতা জানান, তাঁকে ঢুকতে দেওয়া না হলে তিনি আবার কলকাতা আদালতের দ্বারস্থ হবেন। শুভেন্দু বলেন, ‘‘এখানে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করব। বেলা ১২টা ১০ মিনিটে আমি গাড়ি ঘুরিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের দ্বারস্থ হব। হাই কোর্টকেও মানছে না মমতার সরকার।’’
প্রসঙ্গত, সন্দেশখালি রওনা দেওয়ার আগে শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, রাজ্য সরকার এ নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হতে পারে বলে তাঁর কাছে খবর আছে। সে ক্ষেত্রে যদি হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ যদি তাঁকে সন্দেশখালি ঢুকতে নিষেধ করে, তাহলে তিনি ফিরে আসবেন।
এর আগেও দু’বার সন্দেশখালিতে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন শুভেন্দু। প্রথম বার শুভেন্দুদের বাস আটকে দেওয়া হয় কলকাতার সায়েন্স সিটির কাছে বাসন্তী হাইওয়ের উপরে। দ্বিতীয় বার রামপুরে আটকে দেওয়া হয় শুভেন্দুদের বাস। সে বার ফিরে এসে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। সোমবার হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ নির্দেশ দেন, আগামী সাত দিন সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। পাশাপাশি কোর্ট জানায়, সন্দেশখালির কিছু জায়গায় শুভেন্দু যেতে পারবেন। তবে প্ররোচনা দেওয়া যাবে না। আগে থেকে পুলিশকে জানাতে হবে তিনি কোথায় কোথায় যেতে চান। সেই অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকালে ধামাখালি হয়ে সন্দেশখালি পৌঁছতে চান শুভেন্দুরা। সঙ্গে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, অগ্নিমিত্রা পাল, বিশাল লামারা। কিন্তু ধামাখালিতেই আটকে দেওয়া হয় শুভেন্দুদের।
শুধু শুভেন্দুদেরই নয়, ধামাখালিতে আটকে দেওয়া হয় বৃন্দাদেরও। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বৃন্দারা। তিনি বলেন, ‘‘সন্দেশখালিতে আমাদের ঢুকতে দেওয়া হল না। এটা অগণতান্ত্রিক। শেখ শাহজাহানকে পুলিশ খুঁজে পায় না। কারণ, তিনি তৃণমূলের ছত্রছায়ায় রয়েছেন। কেউ কেউ বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করছেন। আমি বলতে চাই, রাষ্ট্রপতির বকলমে বিজেপি শাসন চালাতে চায়। একে আমি বলি, জলে কুমীর, ডাঙায় বাঘ! বিকল্প সরকার চায় মানুষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অগণতান্ত্রিক শাসন বা রাষ্ট্রপতি শাসনের বকলমে বিজেপির শাসন চায় না মানুষ।’’