—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
তাল কাটল আচমকা গুলির শব্দে। ঘটনাস্থল নদিয়ার হাঁসখালির মিলননগর বাজার। শূন্যে গুলি চালিয়ে পাঁচ দুষ্কৃতী পালানোর চেষ্টা করে। হাঁসখালি থানার পুলিশ ধাওয়া করে তাঁদের গাড়ি আটকে দেয়। অস্ত্র-সহ গ্রেফতার করা হয় পাঁচ জনকেই। পরিচয় জানার পর চোখ কপালে পুলিশেরও! জানা যায়, ধৃত পাঁচ জনের মধ্যে দু’জন আইনজীবী। একজন আইনের ছাত্র। বাকি দু’জন পরিচিত সমাজবিরোধী।
নদিয়ার রানাঘাট পুলিশ জেলার হাঁসখালি থানা এলাকার মিলননগর বাজারের কাছে সোমবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ গুলি চালানোর ঘটনার খবর পায় পুলিশ। সূত্রের খবর, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পরেও শূন্যে আরও এক রাউন্ড গুলি চালান দুষ্কৃতীরা। গাড়িটিকে তাড়া করে হাঁসখালি থানার পুলিশ সর্দারপাড়া এলাকায় আটক করে। গাড়ির আরোহী পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গাড়ি থেকে একটি সেভেন এমএম পিস্তল এবং একটি দেশি পিস্তল-সহ প্রচুর কার্তুজ উদ্ধার হয়। ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন প্রসেনজিৎ দেবশর্মা। তিনি রানাঘাট আদালতের আইনজীবী বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, হাঁসখালির বাসিন্দা আশিস নামে এক ব্যক্তিকে মাদক মামলায় পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তখন স্বামীকে ছাড়াতে প্রসেনজিৎকে আইনজীবী হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন আশিসের স্ত্রী। মামলার প্রয়োজনে দু’জনের মধ্যে কথা হত। যা পরবর্তীতে প্রেমের রূপ নেয়। প্রসেনজিতের সওয়ালে আশিস জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে ঘরে ফেরেন। আর ফিরেই জানতে পারেন, তাঁকে জামিন করালেন যে আইনজীবী, সেই প্রসেনজিতের সঙ্গেই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন তাঁর স্ত্রী। রাগের মাথায় নিজের স্ত্রীকে খুন করেন আশিস। খুনের দায়ে আবার গ্রেফতার হন তিনি। সেই মামলা থেকেই সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পান আশিস। তখন প্রসেনজিৎ খবর পান, আশিস তাঁকে খুনের পরিকল্পনা কষছেন। তার আগেই আশিসকে খুনের ছক সাজান আইনজীবী। সে জন্য নিজের সহকর্মীদের পাশাপাশি ভাড়া করেন দুই সমাজবিরোধীকে। কিন্তু আশিসকে খুনের ইচ্ছে পূরণ হয়নি। হাঁসখালি থানার পুলিশের জালে ধরা পড়ে গেলেন আইনজীবী-সহ পাঁচ জন।
রানাঘাট পুলিশ জেলার ডিএসপি (সীমান্ত) সোমনাথ ঝা বলেন, ‘‘অনেক কোণ থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক এই ঘটনার জন্য দায়ী কি না, এখনই তা বলা যাবে না। তবে একজন আইনজীবীর এ ধরনের অপরাধমূলক ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে উদ্বেগের।’’