সন্দেশখালিতে শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: পিটিআই।
লক্ষ্য স্থির থাকলে জয় হবেই। সন্দেশখালি ঘুরে এমনটাই মন্তব্য করলেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য স্থির ছিল। তাই সন্দেশখালি পৌঁছে সেখানের স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছি। মহিলাদের উপর অত্যাচার হয়েছে। আদিবাসীদের জমি নেওয়া হয়েছে। কাউকে আইন তুলে নিতে বারণ করেছি। তবে শাহজানান এখানেই ঘোরাফেরা করছে। আর বাংলাদেশ চলে গেলে সেখান থেকে চুলের মুঠি ধরে নিয়ে আসতে হবে। বিএসএফকে সতর্ক থাকতে হবে।’’
সন্দেশখালির বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহের বাড়ি পৌঁছলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সন্দেশখালিতে অশান্তিতে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন বিজেপি নেতা বিকাশ। পরে তাঁকে জামিন দেয় আদালত। কিন্তু আদালত থেকে বেরনোর সঙ্গে সঙ্গেই বিকাশকে আবার গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই ধৃত বিজেপি নেতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতেই তাঁর বাড়ি গিয়েছেন শুভেন্দু। বিকাশের বাড়ির বাইরে মানুষের ঢল।
বিকাশ সিংহের বাড়ি থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘গ্রামের সকলকে একটা করে মাইক দেব। কেউ ঘরে এলেই চোর এসেছে, দস্যু এসেছে বলে ওই মাইকে চিৎকার করতে হবে। তখন বাকিরাও ঘর থেকে বেরিয়ে আসবেন।’’
সন্দেশখালিতে ঘুরে ঘুরে গ্রামবাসীদের অভিযোগ শুনছেন বিরোধী দলনেতা। সাধারণ মানুষে সঙ্গে কথা বলার সময় শুভেন্দুর আশ্বাস, ‘‘আপনারা সঙ্গে থাকবেন তো? তা হলেই হবে। তা হলেই শাহজাহান ফিনিশ।’’
সন্দেশখালিতে সব পরিবর্তন হয়ে যাবে। শান্তি ফিরে আসবে। সন্দেশখালির সাধারণ মানুষদের সঙ্গে কথা বলার সময় মন্তব্য বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর।
টোটোয় চেপে সন্দেশখালিতে শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। টোটোয় বসেই শুভেন্দু বলেন, “এলাকার মানুষ শান্তি চায়। শেখ শাহজাহানের ফাঁসি চায়। শাহজাহানের পালানোর উপায় নেই।”
শুভেন্দু অধিকারীকে সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত জানায়, শুভেন্দু অধিকারী এবং শঙ্কর ঘোষ সন্দেশখালি যেতে পারবেন। তাঁদের সঙ্গে কোনও সমর্থক বা দলীয় কর্মী যেতে পারবেন না। তা নিশ্চিত করতে হবে। এলাকায় যেন শান্তি ভঙ্গ না হয়, সেটা দেখবে রাজ্য পুলিশ।
সন্দেশখালির পথে শুভেন্দু এবং শঙ্কর। — নিজস্ব চিত্র।
ধামাখালিতে আটকানোর পর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু বলেন, ‘‘হাই কোর্টের নির্দেশকেও মানছে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সরকার ভয় পেয়েছে।’’
ধামাখালিতে পুলিশ আটকানোর পরে মঙ্গলবারই হাই কোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু বলেন, ‘‘এখানে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করব। বেলা ১২টা ১০ মিনিটে আমি গাড়ি ঘুরিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের দ্বারস্থ হব।’’
ফের ধামাখালিতে শুভেন্দু অধিকারী-সহ ছ’জনকে আটকাল পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান বিরোধী দলনেতা। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ তাঁকে আটকে হাই কোর্টের নির্দেশের অবমাননা করছে। এই নিয়ে তৃতীয় বার শুভেন্দুকে সন্দেশখালি যাওয়া থেকে আটকাল প্রশাসন। এর আগের দু’বার বাসন্তী হাইওয়ে এবং রামপুরে বিরোধী দলনেতাকে আটকেছিল পুলিশ।
সন্দেশখালি যাওয়ার পথে ধামাখালিতে সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাটকে আটকাল পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে সিপিএম কর্মীদের বচসা শুরু হয়ে যায়। বৃন্দা জানান, মাত্রা চার জনকে নিয়ে তিনি সন্দেশখালি যেতে চান। কিন্তু পুলিশের তরফে অনুমতি দেওয়া হয়নি।
বৃন্দা বলেন, ‘‘সন্দেশখালিতে আমাদের ঢুকতে দেওয়া হল না। এটা অগণতান্ত্রিক। পুলিশের যদি এত ক্ষমতা থাকে, তা হলে কেন শাহজাহান শেখকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না? শাহজাহান গ্রেফতার হলে, অনেক সত্যি সামনে আসবে। ওই জন্য ওকে ধরা হচ্ছে না। মেয়েদের অবস্থা শোচনীয়। আমি কল্পনা করতে পারছি না। জাতীয় মহিলা কমিশন এবং এসসি কমিশন উত্তরপ্রদেশ এবং মণিপুর যাচ্ছে না। অথচ বাংলায় তারা রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করছে। রাষ্ট্রপতি শাসন মানে বিজেপি শাসন। আমরা এর বিরোধিতা করছি। বিকল্প সরকার চায় মানুষ। অগণতান্ত্রিক শাসন বা রাষ্ট্রপতি শাসনের বকলমে বিজেপির শাসন চায় না মানুষ।’’
শুভেন্দুর সঙ্গে দেখা করলে বাড়িঘর ভাঙচুর করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে! তেমনটাই অভিযোগ জানিয়ে সরব সন্দেশখালির ঘোষপুর এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, শুভেন্দুর সঙ্গে দেখা করলে এলাকায় থাকতে দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, উত্তম সর্দার এবং শিবপ্রসাদ হাজরার অনুগামীদের বিরুদ্ধে।
সন্দেশখালিতে আবার নতুন করে ১২ জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করল প্রশাসন। ধামাখালি ঘাট , সন্দেশখালি ঘাট , ভোলাখালি ঘাট , খুলনা ঘাট, জেলেখালি ঘাট— সহ মোট ১২ জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন ।
শুভেন্দু অধিকারী সন্দেশখালি পৌঁছনোর আগেই পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ ধামাখালি-সহ একাধিক এলাকা। পুলিশের প্রচুর বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে প্রশাসন।
সন্দেশখালির যাচ্ছেন বৃ্ন্দা কারাট-ও। মঙ্গলবার সকালে কলকাতা পৌঁছে সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা দেন সিপিএমের পলিটব্যুরো নেত্রী। কলকাতা পৌঁছে বৃন্দা বলেন, ‘‘সন্দেশখালির মহিলাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য আমি সন্দেশখালি যাচ্ছি। সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। তাই আমি সেখানে যাচ্ছি।’’
সন্দেশখালির নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গায় যেতে পারবেন শুভেন্দু। সোমবার শুভেন্দু বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, সন্দেশখালির ছয়-সাতটি গ্রামে যাবেন তিনি, যেখানে মহিলারা ‘নির্যাতিত’ হয়েছেন। যে সব জায়গা থেকে বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে, সেখানেও যাবেন।
সন্দেশখালি যাচ্ছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। সোমবার এমনটাই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুকে শর্তসাপেক্ষে সন্দেশখালি যাওয়ারও অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার সকালেই সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা হন তিনি।