কংগ্রেসের সিবিআই দফতর ঘেরাও কর্মসূচি। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে সিবিআই দফতর ঘেরাও কর্মসূচিতেও বহাল রইল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। বুধবার বড়বাজার জেলা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কলকাতায় সিবিআইয়ের অন্যতম দফতর নিজাম প্যালেস ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া হয়েছিল। মূলত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বিরোধী বলে পরিচিত নেতারা এই কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন। নিজাম প্যালেস ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নেন প্রবীণ রাজনীতিক প্রদীপ ভট্টাচার্য, প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী, ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক এবং যুব কংগ্রেসের প্রাক্তন সহ-সভাপতি রোহন মিত্র প্রমুখ।
উল্লেখ্য, এই কর্মসূচিতে যোগদান করেননি পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের অধীর গোষ্ঠীর কোনও নেতা। তবে বিধান ভবনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এমনটাই প্রত্যাশিত ছিল। কারণ মঙ্গলবার রাতেই অধীর শিবিরের অন্যতম নেতা সৌম্য আইচ রায় বিরোধী শিবিরের ডাকা এই কর্মসূচিতে যে প্রদেশ নেতৃত্বের সায় নেই, তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। এক লিখিত বিবৃতিতে কংগ্রেসের এই মুখপাত্র জানান, “প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা আপনারা জানেন আরজি কর-কাণ্ডে মহামান্য কলকাতা হাই কোর্ট এবং সর্বোপরি সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ মতো এবং তত্বাবধানে সিবিআই এই তদন্ত করছে। কলকাতা পুলিশ তথ্য প্রমাণ লোপাট করেছে বলে আমরা বিশ্বাস করি, বাংলার মানুষের এখন শেষ ভরসা সিবিআই। আমরা সাম্প্রতিক ঘটনায় আশাবাদী যে, সিবিআই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করবে। তাই পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি আপাতত হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের কথা মাথায় রেখে, সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কোনও আন্দোলন করছে না এবং কোনও আন্দোলনকে সমর্থন করছে না।” এমন বিবৃতি দিয়ে অধীর শিবির বুঝিয়ে দিয়েছে এখনও প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের রাশ তাদের হাতে রয়েছে। তাই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে এড়িয়ে খেয়ালখুশি মতো কোনও কর্মসূচি নেওয়া যাবে না।
কিন্তু প্রবীণ হলেও, প্রদীপ-মান্নানেরা কর্মসূচিতে শামিল হয়ে অধীর শিবিরকেও বুঝিয়ে দিয়েছেন, যে তাঁদের অনুমতি ছাড়াও রাজ্য কংগ্রেসের নেতাদের একাংশ এখনও কলকাতা শহরে কর্মসূচি করার ‘ক্ষমতা’ রাখে। অধীর বিরোধী শিবিরের এক নেতার কথায়, ‘‘সভাপতি হয়েও দলের প্রবীণ এবং অভিজ্ঞ নেতাদের কোনও কদর নেই বাংলার কংগ্রেসে। কিন্তু এমন সময় এসেছে যে সাধারণ মানুষের দাবি মেনে রাজনৈতিক দলগুলিকে আন্দোলনে নামতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় যদি আমরা কারও অনুমতির অপেক্ষা করি, তা হলে তা বতর্মান সময়ে সমীচীন হবে না। তাই প্রবীণ নেতারা নেতৃত্ব দেওয়ায় কংগ্রেস কর্মীরা রাস্তায় নামার সুযোগ পেয়েছেন। এ ক্ষেত্রে কোনও দ্বন্দ্বের কথা উল্লেখ না করাই শ্রেয়।’’