রাজভবনের সামনে কংগ্রেসের বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র।
দিল্লি-হিংসার প্রতিবাদে এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সংসদে সরব তিনি। দিল্লিতেই কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরীর বাড়ি সংলগ্ন দফতরে এ বার হামলা চালাল দুষ্কৃতীরা। দফতরের কর্মীদের মারধর এবং নথিপত্র নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে। অধীরবাবুই এখন কার্যত লোকসভার বিরোধী দলনেতা, যাঁর পদমর্যাদা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সমতুল। খাস রাজধানীতে কী ভাবে তাঁর বাড়ির দফতরে লোকজন গিয়ে হামলা চালিয়ে চললে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভে নেমে পড়েছে কংগ্রেস।
ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ অধীরবাবুর হুমায়ুন রোডের বাংলো সংলগ্ন দফতরে। অধীরবাবু তখন সংসদে ছিলেন। তাঁর ব্যক্তিগত সচিবের অভিযোগ, চার-পাঁচ জন ওই দফতরে এসে অধীরবাবুর সঙ্গে কথা বলতে চায়। তাদের বলা হয়, ফোন নম্বর বা ই-মেল দিয়ে গেলে পরে যোগাযোগ করে নেওয়া হবে। কিন্তু আগন্তুকেরা তখনই অধীরবাবুকে ফোনে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য জোর করতে থাকে। দফতরের কর্মীরা রাজি না হওয়ায় তাঁদের উপরে চড়াও হয় তারা, ফাইলের কাগজপত্র ছিঁড়ে দেয়। তুঘলক রোড থানায় ঘটনা জানিয়ে অভিযোগ করেছেন অধীরবাবুর সচিব প্রদীপ্ত রাজপণ্ডিত।
অধীরবাবু বলেন, ‘‘আমি তখন সংসদে ছিলাম। খবর পেয়ে এসে শুনেছি, আমার অফিসের কর্মীদের ধাক্কাধাক্কি করেছে। কারা এমন ঘটনা ঘটাল, জানি না।’’ ঘটনা হল, লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা হলেও তাঁর বাড়ির সামনে কোনও পুলিশ পোস্ট নেই। ঘটনার পরে এ দিন তাৎক্ষণিক ভাবে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তাঁর নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি তুলেছেন কংগ্রেস নেতারা। দিল্লিতে অধীরবাবু এক্স এবং নিজের রাজ্যে ওয়াই ক্যাটিগরির নিরাপত্তা পান।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের অভিযোগ, ‘‘সংসদে অধীর যে ভাবে দিল্লির হিংসার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে, তার বদলা নিতেই এই কাপুরুষতা বলে আমরা মনে করছি। দিল্লির আইনশৃঙ্খলার হাল এমনই যে, লোকসভায় কংগ্রেস নেতার বাড়িতেও দুষ্কৃতীরা অবাধে আক্রমণ করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলায় এসে সরকার গড়ার কথা বলছেন অথচ রাজধানীর এই ভয়াবহ অবস্থা নিয়ে মানুষকে আশ্বস্ত করছেন না!’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর মতে, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইস্তফা চাইলে বিরোধী নেতার বাড়িতে হামলা হবে! বোঝাই যাচ্ছে, অমিত শাহদের কাছে গণতন্ত্রের কোনও মূল্য নেই।’’ একই সুরে সরব হয়েছেন বহরমপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তীও। রাজ্য জুড়ে আজ, বুধবার ধিক্কার দিবসের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস ও তাদের সব শাখা সংগঠন। ঘটনার প্রতিবাদে মৌলালির মোড়ে এ দিন সন্ধ্যাতেই অবরোধে বসেন শুভঙ্কর সরকার, আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়েরা। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ হয়েছে অধীরবাবুর লোকসভা কেন্দ্র বহরমপুরেও।