Congress

Jhalda Murder: ঝালদা-কাণ্ডে লোকসভায় সরব অধীর, কটাক্ষ তৃণমূলের

সুকান্ত মজুমদারও মন্তব্য করেছেন, ‘‘মতাদর্শগত ভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য থাকলেও অধীরবাবু আজ যা অভিযোগ করেছেন, তা একেবারেই ঠিক।’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২২ ০৪:০৮
Share:

যুব কংগ্রেসের রাজভবন অভিযান নিজস্ব চিত্র।

পুরুলিয়ার ঝালদায় গিয়ে সদ্যবিজয়ী কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুকে হত্যার জন্য সোমবার তৃণমূল তথা পুলিশের দিকে আঙুল তুলেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ‘মার্ডার ফর মেজরিটি’ অর্থাৎ, পুরবোর্ড গঠনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে এই খুন বলে অভিযোগ ছিল তাঁর। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লোকসভায় দাঁড়িয়েও সেই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সরব হলেন অধীর।

Advertisement

লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা অধীর এ দিন অভিযোগ করেন, ‘‘কংগ্রেস ঝালদায় পুরবোর্ড গড়ার প্রক্রিয়ায় এগিয়ে ছিল। শাসক দল সেখানে পুলিশের একটা অংশকে সঙ্গে নিয়ে নির্মম ভাবে তপন কান্দুকে হত্যা করেছে, যাতে তারা পুরবোর্ড দখল করতে পারে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন চলাকালীন ও নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে সন্ত্রাস, হিংসা, খুন নির্বিচারে চলছে। বাংলায় হিংসা, সন্ত্রাস, অরাজকতা বিরাজ করছে। এই বাংলায় রাজনীতির কোনও জায়গা নেই।’’ সংসদে বক্তৃতা করার সময়ে তৃণমূল সাংসদদের একাংশ তাঁকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ।

একই সুরে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও মন্তব্য করেছেন, ‘‘মতাদর্শগত ভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য থাকলেও অধীরবাবু আজ যা অভিযোগ করেছেন, তা একেবারেই ঠিক।’’

Advertisement

অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘কংগ্রেস নিজেদের ঝামেলা তৃণমূলের ঘাড়ে চাপাচ্ছে। কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা জানেন না, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার বিষয় সংসদে তোলা যায় না।’’ তাঁর আরও দাবি, “আজ বিজেপি অধীরবাবুকে সমর্থন করায় আশ্চর্য হইনি। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস ও বিজেপি আসলে একই! তাদের একটাই লক্ষ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হটানো।”

হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে কংগ্রেসের ডাকা বন্‌ধে এ দিন ‘সর্বাত্মক’ প্রভাব পড়ে ঝালদায়। নিহত তপনবাবুর বাড়ি গিয়ে তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমার সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যের প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, কলকাতার কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক, অমিতাভ চক্রবর্তী, কংগ্রেসের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতোরা। মান্নান বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী এমন পরিস্থিতির দায় এড়াতে পারেন না। অপরাধীদের শাস্তি ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। দলের জেলা সভাপতি নেপালের দাবি, “বন্‌ধ সমর্থনের মাধ্যমে মানুষ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।’’ জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক প্রদীপ রায়ও বলেন, ‘‘এই বন্‌ধে আমাদের নৈতিক সমর্থন ছিল। ঝালদা-সহ অন্যত্র বন্‌ধে মানুষ সাড়া দিয়েছেন।” তবে বিরোধীদের ডাকা বন্‌ধের বিরোধিতায় তৃণমূলের তরফে কোনও ‘সক্রিয়তা’ চোখে পড়েনি। ঝালদা শহর তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস সেনের বক্তব্য, ‘‘তপন কান্দুর খুনে প্রকৃত দোষীরা সাজা পাক, তা আমরাও চাই। এ কথা আমরা আগেও বলেছি। তাই রাস্তায় নেমে সরাসরি সক্রিয় বিরোধিতা করিনি।”

ঝালদা ও পানিহাটিতে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের দুই নিহত কাউন্সিলরের পরিবারের উদ্দেশেই এ দিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ‘পরামর্শ’ দিয়েছেন সিবিআই তদন্তের দাবি করার। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় পাল্টা বলেছেন, পুলিশই প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বার করে শাস্তির ব্যবস্থা করবে। তপন-হত্যায় দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে এ দিনই বিধানসভা অভিযানের ডাক দিয়েছিল যুব কংগ্রেস। বিধানসভার ২ নম্বর ফটক বেয়ে উঠে পড়ার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি বাধে। প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি শাদাব খান-সহ বিক্ষোভকারীদের ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement