Dhupguri By election

ধূপগুড়িতে যৌথ সভা হবে সেলিম-অধীরের, ‘পুকুরের’ ভোটে ‘নদীর’ কথা ভাবছেন না প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি

উত্তরবঙ্গের ধূপগুড়িতে ৩০ এবং ৩১ অগস্ট প্রচারে যাবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ২ সেপ্টেম্বর যাওয়ার কথা তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার মাঝে যৌথ সভা অধীর-সেলিমের।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২৩ ১৭:৪০
Share:

(বাঁ দিকে) অধীর চৌধুরী। মহম্মদ সেলিম (ডান দিকে)। —গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।

ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে সিপিএম প্রার্থীকে সমর্থন করার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সেই সমর্থন শুধু মৌখিক রইল না। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের সঙ্গে যৌথ সভা করতে চলেছেন অধীর। শুক্রবার লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা অধীর আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘১ সেপ্টেম্বর ধূপগূড়িতে সেলিম সাহেবের সঙ্গে সভা করব।’’ সেলিমও বলেন, ‘‘স্থানীয় স্তরে যৌথ প্রচার চলছে। ১ তারিখ কেন্দ্রীয় সমাবেশ হবে। সেখানে অধীর এবং আমি থাকব।’’

Advertisement

সম্প্রতি অধীর চৌধুরীর একটি সাক্ষাৎকার কংগ্রেসিদের মধ্যে তো বটেই, বাম মহলেও কৌতূহলের উদ্রেক করেছিল। সেই সাক্ষাৎকারে সর্বভারতীয় স্তরে ‘ইন্ডিয়া’ জোট এবং রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সমীকরণ নিয়ে বহরমপুরের সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর বলেছিলেন, ‘‘পুকুর এবং নদীর মধ্যে ফারাক আছে। আমার কাছে বাংলা হল পুকুর। আর ভারত হল নদী। আমি যেটা বলতে চাই, সেটাই বলি। পিছন থেকে কথা বলি না।” অধীর আরও বলেছিলেন, তাঁদের এখন পুকুর বাদ দিয়ে নদীর কথা ভাবতে হবে। অধীরের ওই বক্তব্যের পর সিপিএমের অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন, হাইকমান্ডের ‘চাপ’ এলে প্রদেশ কংগ্রেস তৃণমূলের সঙ্গে রাজ্যে ‘সমঝোতা’ করে নিতে পারে। কারণ, অধীরের ওই বক্তব্যে তৃণমূলের প্রতি ‘নমনীয়’ হওয়ার একটা ইঙ্গিত ছিল বলে অনেকেই মনে করেছিলেন। ভোটে জেতা-হারার থেকেও আলিমুদ্দিন স্ট্রিট এবং বিধান ভবনের মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছিল নিচুতলার কর্মীদের ধোঁয়াশা কাটানো। বিভিন্ন সময়ে দুই দলের নেতাদের নিচুতলার কর্মী-সমর্থকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল। অনেকে মনে করছেন, সেই ‘বাধ্যবাধকতা’ থেকে ধুপগুড়ির উপনির্বাচনের প্রচারে যৌথ সভা করতে হচ্ছে সেলিম-অধীরকে।

প্রসঙ্গত, সাগরগিঘি উপনির্বাচনের সময়েও কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের সমর্থনে সভা করতে গিয়েছিলেন সেলিম। সেই নির্বাচনে বাইরনের জয়ের পর সংখ্যালঘু ভোটের সমীকরণ, বাংলার রাজনীতির ভবিষ্যৎ ইত্যাদি নিয়ে বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছিল। যদিও ভোটে জেতার তিন মাসের মধ্যেই বাইরন তৃণমূলে যোগ দেন। যে ঘটনা বাম-কংগ্রেসের জোটের মেজাজে ‘ধাক্কা’ দিয়েছিল। তার পর পটনা ও বেঙ্গালুরুতে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকের পর দু’দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বিভ্রান্তি খানিকটা বাড়ে। কংগ্রেস এবং সিপিএম শিবিরে অনেকের মতে, সেলিম-অধীরের যৌথ প্রচারের রাজনৈতিক অন্যতম উদ্দেশ্য হল সেই ‘বিভ্রান্তি’ কাটানো।

Advertisement

২০২১ সালের ভোটে ধূপগুড়ি আসনটি জিতেছিল বিজেপি। বিধায়ক বিষ্ণুপদ রায়ের অকালমৃত্যুর কারণে রাজবংশী অধ্যুষিত এই আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে। সিপিএম ধুপগুড়িতে প্রার্থী করেছে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তথা ভাওয়াইয়া গানের শিল্পী ঈশ্বরচন্দ্র রায়কে। তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে লড়ছেন অধ্যাপক নির্মলচন্দ্র রায়। বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কাশ্মীরে শহিদ জওয়ানের স্ত্রী তাপসী রায়। ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে, ধূপগুড়িতে ৩০ এবং ৩১ অগস্ট প্রচারে যাবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ২ সেপ্টেম্বর যাওয়ার কথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মাস পয়লায় সভা করবেন সেলিম-অধীর। ধুপগুড়িতে ভোট ৫ সেপ্টেম্বর। ৮ সেপ্টেম্বর ফলঘোষণা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement