Abhishek Banerjee

স্বামীজির জন্মদিনে কলকাতার পথে মিছিলের দ্বৈরথে শুভেন্দু-অভিষেক

সাম্প্রতিক কালে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই গোলাগুলি ছুড়ে চলেছেন তাঁরা। বিবেকানন্দের জন্মদিবস ঘিরে তরজা নতুন মাত্রা পেতে চলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ১৪:০৪
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

মঙ্গলবার স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিবসকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতির দুই যুযুধান শিবিরের যুদ্ধ এবার খোদ শহর কলকাতায়। মঙ্গলবার শহরের দুই প্রান্তে দুই মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন শুভেন্দু অধিকারী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সাম্প্রতিক কালে যাঁরা একে অপরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই গোলাগুলি ছুড়েছেন।

Advertisement

নতুন বছরের গোড়াতেই বিজেপি জানিয়েছিল, ১২ জানুয়ারি স্বামীজীর জন্মদিবসে শ্যামবাজার থেকে স্বামীজির জন্মস্থান সিমলা ষ্ট্রিট পর্যন্ত মিছিল হবে। বিজেপি-তে যোগদানের পর এই প্রথম কলকাতায় প্রকাশ্যে কোনও কর্মসূচিতে অংশ নেবেন শুভেন্দু। সেই মতো গেরুয়া শিবির প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে। তবে স্বামীজীর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত ওই মিছিলে কোনও রাজনৈতিক পতাকা থাকবে না বলেই জানা গিয়েছে। ‘বিবেকের ডাক’-এ ওই মিছিল করা হবে বলে জানিয়েছিল রাজ্য বিজেপি।

সেই মিছিলেরই পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তৃণমূল যুব কংগ্রেস। রবিবার রাতে ঠিক হয়েছে উত্তর কলকাতায় বিজেপি-র ওই মিছিলের পাল্টা দক্ষিণ কলকাতায় মিছিল করবে তৃণমূল। গোলপার্ক থেকে হাজরা মোড় অবধি মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন তৃণমূলে অঘোষিত ‘দু’নম্বর’ অভিষেক। তাঁর নেতৃত্বে আয়োজিত মিছিলে বৃহৎ জনসমাগমের উদ্যোগও শুরু হয়েছে জোরকদমে। অভিষেকের কালীঘাটের দফতর থেকে দক্ষিণ কলকাতা তো বটেই, এ ছাড়াও উত্তর কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলি জেলা তৃণমূলের সমস্ত নেতাকে ওই মিছিলে সর্বস্তরের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বার্তা পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘মিছিলে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক’।

Advertisement

আরও পড়ুন: আমরা সবাই নাগরিক, বার্তা মতুয়াদের, সিএএ নিয়ে বিজেপিকে তোপ মমতার​

মিছিলের শেষে হাজরায় এক পথসভাও হবে। সেখানে বক্তৃতা করবেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক। দক্ষিণ কলকাতার এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) দল গঠনের সময় থেকেই দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূলের গড় হিসেবে পরিচিত। সেই গড়ে বিশাল জমায়েত করে শুভেন্দুকে জবাব দেওয়াই প্রকৃত লক্ষ্য ওই মিছিলের।’’ বস্তুত, জনপ্রিয়তায় শুভেন্দু যে অভিষেকের থেকে অনেক পিছিয়ে, তা প্রমাণ করতেই সর্বশক্তি প্রয়োগ করছেন অভিষেক ও তাঁর যুব সংগঠনের নেতারা।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ ডিসেম্বর বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার দিন থেকেই অভিষেককে তাক করে ‘তোলাবাজ ভাইপো’ হটানোর ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু। কখনও ডায়মন্ডহারবার, কখনও আরামবাগ, কখনও আবার গঙ্গারামপুরের জনসভা থেকে শুভেন্দুর নাম না করে তার জবাবও দিয়েছেন অভিষেক। কিন্তু কখনওই সম্মুখসমর বা ‘ম্যান মার্কিং’ করা হয়নি শুভেন্দুকে। বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মমতা-অভিষেক বাদে তৃণমূলের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির নেতারা সরাসরি আক্রমণ করেছেন নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ককে। কিন্তু ‘বিবেকের ডাক’-এ শুভেন্দুর উত্তর কলকাতায় মিছিলে থাকার ঘোষণা হওয়ায় তাঁকে আর জমি ছাড়তে চাইছেন না অভিষেক।

আরও পড়ুন: কয়লা পাচার-কাণ্ডে রাজ্য জুড়ে তল্লাশি ইডির, দুবাই যোগ আরও স্পষ্ট​

২০১১ সাল থেকেই শুভেন্দু-অভিষেক দ্বৈরথের সূচনা। শুভেন্দু তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি থাকা সত্ত্বেও ২০১১ সালের ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে ঘোষণা করা হয় অভিষেকের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল ‘যুবা’-র কথা। তার পর ২০১৪ সালের জুন মাসে শুভেন্দুকে সরিয়ে সৌমিত্র খাঁকে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি করা হয়। তার কয়েক মাসের মধ্যেই সেই পদে অভিষেককে নিয়োগের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন মমতা। সেই থেকে দ্বন্দ্ব বৃদ্ধি পেলেও সতীর্থ হিসেবে কখনও প্রকাশ্যে পরস্পরের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি শুভেন্দু-অভিষেক। কিন্তু এবার পরস্পর বিরোধী শিবিরে দাঁড়িয়ে একে অপরের দিকে আক্রমণ শানানো শুরু করেছেন দু’জনেই। মঙ্গলবার কলকাতার দু’প্রান্তের মিছিলে সেই বিরোধিতা নতুন মাত্রা পাবে বলে মনে করছে বিজেপি এবং তৃণমূল— উভয় পক্ষই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement