দুর্নীতি নিয়ে বিজেপিকে বিঁধলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
তৃণমূল যাকে ‘আবর্জনা’ বলে দল থেকে বার করে দিয়েছিল, তাঁকেই ‘সম্পদ’ বানিয়েছে বিজেপি। রবিবার ত্রিপুরা যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে এমন মন্তব্যই করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এই ‘আবর্জনা’ কে? তাঁর নাম নেননি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। নিজের বক্তব্যে তা অবশ্য বুঝিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘যাঁদের টিভির পর্দায় টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, যাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে, সুদীপ্ত সেন ক্যামেরার সামনে বলেছেন, তাঁরা তো এখন বিজেপির সম্পদ। তাঁদের আবর্জনা করে তৃণমূল দল থেকে বার করে দিয়েছিল।’’ অভিষেকের নিশানায় যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীই, তা তাঁর এই মন্তব্য থেকেই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু। এর পর থেকেই শুভেন্দু বনাম তৃণমূল সংঘাতের সূত্রপাত। নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর এই সংঘাতের পারদ আরও চড়ে। নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর কাছে পরাজিত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর থেকেই একাধিক বার শুভেন্দু বনাম অভিষেক দ্বৈরথের সাক্ষী থেকেছে রাজ্য রাজনীতি। তবে আক্রমণ করতে গিয়ে কেউই কখনও কারও নাম নেন না। অভিষেককে ‘কয়লা ভাইপো’ বলে কটাক্ষ করতে দেখা যায় শুভেন্দুকে। এই যুযুধান পর্বের মধ্যেই দুর্নীতি প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শুভেন্দুকে রবিবার আবার আক্রমণ করলেন তৃণমূলের ‘সেনাপতি’।
আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে ৬০ আসনের মধ্যে ২৮টিতে প্রার্থী দিয়েছে জোড়াফুল। ভোটের আগে সে রাজ্যে পুরোদমে প্রচারে রয়েছেন অভিষেক। নির্বাচনী প্রচারের উদ্দেশ্যেই রবিবার ত্রিপুরা পাড়ি দিয়েছেন তিনি। রবিবারই ত্রিপুরায় ভোটের প্রচার সেরেছেন শুভেন্দু। এই আবহে নাম না করে বিরোধী দলনেতাকে আবার নিশানা করলেন অভিষেক।
ত্রিপুরা যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন অভিষেক। সেই সময় দুর্নীতির প্রসঙ্গে বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত যারা, তাদের কাছ থেকে নীতির পাঠ শিখতে হবে না।’’ এর পরই তৃণমূলের অন্দরে দুর্নীতি নিয়েও অকপটে মুখ খোলেন অভিষেক। বলেন, ‘‘নিশ্চিত ভাবে আমাদের দলেও কেউ রয়েছেন, যাঁরা দুর্নীতি করেছেন। কিন্তু আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। তারা (বিজেপি)কি ব্যবস্থা নিয়েছে? আমরা প্রধানদের পদত্যাগ করিয়েছি, বহিষ্কার করেছি। ক্ষমতা থাকলে প্রধানকে পদত্যাগ করে দেখাক বিজেপি। আমরা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতাকে দল থেকে সাসপেন্ড করেছি।’’ এর পরই নাম না করে শুভেন্দুর প্রসঙ্গ টানেন অভিষেক। তিনি এ-ও বলেন, ‘‘পথ চলতে গিয়ে মানুষের ভুল হয়। কিন্তু ভুলের বিরুদ্ধে যদি কেউ ব্যবস্থা না নেয়, আরও বড় বড় পদপ্রাপ্তি, তাঁদেরই যদি পুরস্কারপ্রাপ্তি হয়, এর থেকে তো লজ্জার কিছু নেই।’’