দিলীপ ঘোষ এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।— ফাইল চিত্র।
রাজ্য জুড়ে সব হাসপাতালে আউটডোর পরিষেবা বন্ধ রাখার সমালোচনা করলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিষেবা বন্ধ রাখার কারণে যদি কোনও রোগীর মৃত্যু হয়, তা হলে তার দায় কার, বুধবার সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। অন্য দিকে, রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের মত, হাসপাতালে যে রোগীরা এসেছেন তাঁদের পরিষেবা তো দিতেই হবে। পরিষেবা সর্বাগ্রে। তবে চিকিৎসকদের নিরাপত্তাও জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ দিন বিকেলে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন অভিষেক। সেখানে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা নিয়ে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়। অভিষেক জানান, চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনায় ইতিমধ্যেই প্রশাসন ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। নিগ্রহের ওই ঘটনার তীব্র নিন্দাও করেন তিনি।
চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনায় এ দিন রাজ্য জুড়ে সমস্ত সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে আউটডোর বন্ধের ডাক দেওয়া হয়। তার জেরে দিনভর হাজার হাজার রোগী চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। অভিষেক সেই প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘হাজার হাজার, লাখো লাখো মানুষ চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন। কিন্তু চিকিৎসা মেলেনি। মেদিনীপুর মেডিক্যালে তো এক জনের মৃত্যু হয়েছে চিকিৎসা না পেয়ে। প্রচুর মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।’’ এর পরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘যাঁরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে, অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে চিকিৎসা পরিষেবা দেন তাঁদের প্রতি সম্মান জানাচ্ছি। কিন্তু, এই যে এত মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন না, এটা মোটেও ঠিক নয়।’’
আরও পড়ুন: শিশু কোলে বাবার আর্তি, ‘ছেলেটাকে বাঁচান’, জুনিয়র ডাক্তাররা বলে দিলেন, ‘এখানে হবে না’
দুই জুনিয়র ডাক্তার গুরুতর জখম হয়ে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিষেক তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করার পাশাপাশি এই প্রশ্নও তোলেন, রাজ্যে জুড়ে পরিষেবা বন্ধ রাখার ফলে যদি কারও মৃত্যু হয়, সেই দায় কার? তাঁর কথায়, ‘‘চিকিৎসকদের সমস্ত দাবিদাওয়াকে নিশ্চয়ই মান্যতা দেবে সরকার। কামনা করি ওই চিকিৎসকেরা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন। কিন্তু তাঁদের কোনও ক্ষতি হলে যেমন ওই পাঁচ জনকে দোষী করা হবে, তা হলে এই যে পরিষেবা বন্ধ রাখার ফলে চিকিৎসা না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মানুষ, মারাও যাচ্ছেন, সেই দায় কারা নেবেন?’’
এ দিন বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘আজ পশ্চিমবঙ্গে কোনও হাসপাতাল খোলা নেই। লক্ষ লক্ষ রোগী সমস্যায়। তা সত্ত্বেও চিকিৎসকেরা আন্দোলনে অনড়। তা হলে ভাবুন কী পরিস্থিতি রাজ্যে!’’ চিকিৎসকেরা কেন এই রকম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন, তা ভেবে দেখার অনুরোধ জানান তিনি। দিলীপবাবুর দাবি, ‘‘কোনও হাসপাতালে আমরা ঢুকতে গেলে পুলিশ আটকে দেয়। বলে, ভিতরে যাবেন না। আর যারা দুধেল গরু, যাদের লাথি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খান, তাদের গায়ে পুলিশ হাত দিতে পারবে না।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘হাসপাতালে যে রোগীরা এসেছেন, তাঁদের পরিষেবা তো দিতেই হবে। পরিষেবা সর্বাগ্রে। কিন্তু চিকিৎসকদের নিরাপত্তাটাও তো জরুরি। আমি বলছি, সার্ভিস মাস্ট, কিন্তু সিকিওরিটি ফার্স্ট।’’