বৃহস্পতিবার ত্রিপুরা যেতে পারেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র
বৃহস্পতিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরায় গেলে বিক্ষোভের মুখে পড়তে পারেন। গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, আগরতলাতেই বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিচ্ছে দল। ত্রিপুরার বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য এমন কোনও প্রস্তুতির কথা মানতে অস্বীকার করেছেন। তবে বিক্ষোভ যে হতেই পারে, সে কথাও শুনিয়ে রাখছেন তাঁরা। ত্রিপুরায় বিজেপি-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কিশোর বর্মণ আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘দলের এমন কোনও পরিকল্পনা নেই। আমরা সকলকেই স্বাগত জানাতে তৈরি। তবে কেউ জনরোষের মুখে পড়লে তার দায় তো বিজেপি নিতে পারে না।’’
ত্রিপুরায় গিয়ে গত সোমবার থেকে আটক রয়েছেন তৃণমূলের ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের ২৩ সদস্য। বুধবার আগরতলায় গিয়েছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক এবং তৃণমূলের শ্রমিক নেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার যেতে পারেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। এর পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ত্রিপুরায় যেতে পারেন বলে বুধবার জানিয়েছেন ব্রাত্য। তবে সেই সফর কবে হতে পারে তা স্পষ্ট করেননি তিনি। আগরতলায় সাংবাদিক বৈঠকে বাংলার শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘বিজেপি ভয় পাচ্ছে। তাই তারা এ সব করছে। গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা হচ্ছে।” এর পরই ব্রাত্য বলেন, “আমরা দলনেত্রীর নির্দেশে এখানে এসেছি। আইপ্যাকের দলের সঙ্গে কথা বলব। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলব। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলব। প্রয়োজনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আসবেন।”
তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, মমতার সফর এখনও চূড়ান্ত না হলেও বৃহস্পতিবার অভিষেকের সফর অনেকটাই নিশ্চিত। আর সেই সফরেই ত্রিপুরায় ঢুকতে বাধার মুখে পড়তে পারেন তৃণমূল সাংসদ। বুধবার সকালে যাওয়া তৃণমূলের প্রতিনিধিরাও করোনা বিধি ভঙ্গের অভিযোগে বিমানবন্দরে আটকে থাকেন কিছু ক্ষণ। এর পরে অভিষেক গেলে তাঁকে কোন পথে আটকানো হবে তার পরিকল্পনা চলছে বলে খবর। জানা গিয়েছে, অভিষেককে রাস্তায় কালো পতাকা দেখানোর পাশাপাশি তিনি যেখানে থাকবেন সেখানেও বিক্ষোভ সংগঠিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বাংলার ভোটে বিপুল ভাবে জিতে তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল ঘোষণা করেছে, এ বার অন্যান্য রাজ্যেও সংগঠন বৃদ্ধির জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহেই যেন তার সূচনা হয়ে গেল। বুধবার যখন রাজধানী দিল্লিকে বঙ্গরাজনীতির অঙ্গন করে তুলেছেন মমতা, তখন ত্রিপুরাও উত্তপ্ত তৃণমূলের উপস্থিতি নিয়ে। তবে ত্রিপুরা যে তৃণমূলের লক্ষ্য হয়ে উঠতে পারে তা আন্দাজ করে আগেই প্রস্তুতি নিয়েছে বিজেপি। সদ্যই বাংলার সহ সংগঠন সম্পাদক কিশোর বর্মণকে পাঠানো হয়েছে ত্রিপুরায়। কিশোর বুধবার আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘বাংলায় ভোটের পরে যে সন্ত্রাস চলছে, যে ভাবে খুন করা হচ্ছে বিজেপি কর্মীদের, তা নিয়ে এখানেও সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। তাই মানুষ তৃণমূল নেতাদের কাছে জবাব চাইতেই পারেন।’’ ত্রিপুরায় কি তৃণমূলের কারণে ভাঙনের ভয় পাচ্ছে বিজেপি? কিশোর বলেন, ‘‘চেষ্টা করে দেখুক। এই মাটি বিজেপি-র মাটি। বামেদের ক্ষমতাচ্যূত করেছি আমরা। তৃণমূলের ‘খেলা হবে’ স্লোগানে এখানে কাজ হবে না।’’