দিল্লি সফরের তৃতীয় দিনে বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরদিল্লিসফর ঘিরে জল্পনার শীর্ষে জাতীয় রাজনীতি। বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের ডাক তিনি আগেই দিয়েছেন। এই সফরে সেই লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ দেখা গিয়েছে। সে সব ঘিরে তৈরি হয়েছেনানা জল্পনা। বিরোধী জোটের মুখ কি রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-কে থমকে দেওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? এমন জল্পনা মমতা আরও বাড়িয়ে দিলেন তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যে। বললেন, ‘‘আমি রাজনৈতিক জ্যোতিষী নই। সব কিছুই নির্ভর করছে পরিস্থিতি কোন দিকে এগোয় তার উপরে।’’ রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, এই জবাবের মধ্য দিয়ে মমতা যেমন জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর ‘মুখ’ হয়ে ওঠার প্রশ্নে ‘হ্যাঁ’ বলেননি, তেমন ‘না’ওবলেননি।
দিল্লি সফরের তৃতীয় দিন বুধবার তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। দলের রাজ্যসভা সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের বাড়ির ওই বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন-সহ দলের লোকসভা ও রাজ্যসভা সাংসদেরা হাজির ছিলেন। বৈঠক শেষে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমরা প্রধানমন্ত্রী পদে দেখতে চাই। এখন দেশের মধ্যে তিনিই বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের প্রধান মুখ। তাঁর নেতৃত্বেই বিজেপি-কে হঠানো সম্ভব। দলের সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আমরা সব সাংসদ মিলে সেই প্রস্তাবই দিয়েছি। আমরা তাঁর নেতৃত্বেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে উৎখাত করতে চাই।’’
তবে জোট গড়ায় প্রধান উদ্যোগী হওয়া সত্বেও তিনি ‘মুখ’ হওয়ার বিষয়ে যে আগ্রহী নন তা আগেই বুঝিয়েছেন মমতা। অতীতের মতো এই সফরেও তিনি বলেছেন, ‘‘বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার জন্য আমি সব বিরোধী দলকে সহযোগিতা করতে চাই। আমি নেতা হতে চাই না, সাধারণ ‘ক্যাডার’ হয়ে থাকতে চাই।’’ বুধবার রাজধানীতে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলেন মমতা। সেখানেই জোটের নেতৃত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘যখন বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হবে, তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আমি নিজের থেকে চাইব না। আমি একজন সাধারণ কর্মী আর সেই ভাবেই থাকতে চাই।’’ সেই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা অনেক ‘আচ্ছে দিন’ দেখেছি। এ বার ‘সাচ্চে দিন’ দেখতে চাই।’’