Anubrata Mandal

Abhishek Banerjee: তদন্তের মুখোমুখি হয়েই ‘লড়াই’ চালাতে হবে, সিবিআই ‘এড়ানোর’ পক্ষে নন অভিষেক

অনুব্রতের গরহাজিরার দায়িত্ব তাঁর দিকেই ঠেলে দিয়েছিলেন তাঁদের অন্যতম কুণাল ঘোষ। তার পরেই অভিষেকের মন্তব্যে বিষয়টি ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২২ ০৭:৩১
Share:

তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

সিবিআই তদন্তের মুখোমুখি হয়েই ‘লড়াই’ চালাতে হবে বলে মনে করছেন তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআইয়ের তলব বারবার এড়িয়ে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল বুধবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তা নিয়ে নানা বিতর্কের মধ্যেই বৃহস্পতিবার অভিষেকের মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Advertisement

নিজের উদাহরণ টেনে বৃহস্পতিবার অভিষেক বলেন, ‘‘আমাকে সাত-আট বার নোটিস পাঠিয়েছে। কলকাতার মামলায় দিল্লিতে ডেকেছে। আমি গেছি। নয় ঘণ্টা ধরে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি।’’

গরুপাচার মামলায় অনুব্রতের গরহাজিরা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। এই ঘটনায় যে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে, দলের একাধিক সাংসদ, নেতা এবং মুখপাত্র সে কথা দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। বুধবার সেই ইঙ্গিত দিয়ে অনুব্রতের গরহাজিরার দায়িত্ব তাঁর দিকেই ঠেলে দিয়েছিলেন তাঁদের অন্যতম কুণাল ঘোষ। তার পরেই অভিষেকের মন্তব্যে বিষয়টি ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। অভিষেক অবশ্য এ দিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের অভিযোগে বিজেপিকে চড়া সুরে আক্রমণ করেছেন। রাজ্যে মমতা বিরোধিতায় লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী— সবাই তলায় তলায় এক হয়েছেন বলেও মন্তব্য করেছেন অভিষেক।

Advertisement

বালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়ের সমর্থনে এ দিনের ‘রোড শো’য়ে অভিষেকের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘আমি গিয়ে তদন্তের সম্মুখীন হয়ে সহযোগিতা করেছি। ভেবেছে, আমাকে নোটিস পাঠিয়ে ঘরে বসিয়ে দেবে। আমি অন্য ধাতুতে গড়া।’’ তৃণমূল সূত্রে খবর, বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ জোরদার করা হলেও অনুব্রতের ভূমিকায় দলের ভিতরেই নানা প্রশ্ন উঠেছে। দলের অনেকেই মনে করছেন, বিজেপি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তদন্ত সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করলেও আইনি পথেই তার মোকাবিলা করা উচিত। কিন্তু অনুব্রত যে ভাবে বিষয়টি ‘সামলাচ্ছেন’ তা মানুষের কাছে দল সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা পৌঁছবে।

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সিবিআই, ইডি-র মতো সংস্থাগুলিকে ব্যবহারের অভিযোগ করে এ দিন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুকেও নিশানা করেছেন অভিষেক। নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘যে নারদ মামলায় সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হল তাতে যাদের কাগজে মুড়ে টাকা নিতে দেখা গেল তারা ‘ধোয়া তুলসীপাতা!’’ বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেস ও সিপিএমের সমঝোতার অভিযোগ করে অভিষেকের মন্তব্য, ‘‘কংগ্রেস আর সিপিএম জগাই আর মাধাই। আর সঙ্গে ইডি-সিবিআই। এদের নিয়ে জোট করে বিজেপি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাতে চায়!’’

বাবুলের রাজনৈতিক অতীত নিয়ে চর্চার ব্যাখ্যা দিয়ে নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু ও তাঁর বাবা তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীর উদ্দেশে অভিষেকের প্রশ্ন, ‘‘বাবুল তো তৃণমূলের আদর্শ মেনে যোগ দিয়েছেন। সাংসদপদ ছেড়েছেন। আপনি বাড়ির লোকেদের পদত্যাগ করাচ্ছেন না কেন?’’

প্রতিক্রিয়ায় রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওঁদের শুভেন্দু-জ্বর হয়েছে। ক্ষমতা থেকে চলে গেলে জ্বর সেরে যাবে।’’ আর অনুব্রতকে ঘিরে তৃণমূলের অন্দরের চর্চা নিয়ে কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘অনুব্রত তৃণমূলের সম্পদ। তিনি তৃণমূলে সম্পৃক্ত। তাঁর চড়াম- চড়াম আর গুড়-বাতাসাই তৃণমূলের সাম্রাজ্যের ভিত্তি। এখন তাঁকে ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা ব্যর্থ হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement