বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অঙ্গুলিহেলনেই তৃণমূল নেতাদের ডেকে পাঠাচ্ছে ইডি, সিবিআই-এর মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সোমবার সাড়ে আট ঘণ্টার ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর দিল্লির ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে এসে এমনই মন্তব্য করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বললেন, ‘‘বিরোধী দলনেতা বলছেন, সব ফোনের কলরেকর্ড নাকি ওঁর কাছে আছে। তার পরের দিনই পেগাসাস বেরোচ্ছে। উনি নাম ধরে ধরে কথা বলছেন। পাঁচ জনের নাম নিয়ে বলছেন, এঁদের এ বার সিবিআই ডাকবে। ইডি ডাকবে। ঠিক তাই হচ্ছে। ওই পাঁচ জনকে ডেকে পাঠাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি।’’ শুভেন্দুকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘মানুষ তো সবই দেখছেন। গণতন্ত্রে মানুষকে বোকা বানানো সহজ নয়। ভয় দেখিয়ে বাজার গরম করা যায়, লাইমলাইটে আসা যায়। কিন্তু মানুষের মন জয় করা যায় না। তাঁদের মন জয় করতে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে জানতে হয়। যেটা এঁরা করে না।’’
গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচনে লড়তে পারে না বলেই ইডি, সিবিআই-এর ভয় দেখিয়ে বিরোধী দলের নেতাদের হেনস্থা করতে চায় বিজেপি। ইডি-র জেরার এমনই অভিষোগ করলেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক ভাবে এরা ভোটে লড়তে পারে না। তাই আপনারা দেখবেন, নির্বাচন-উপনির্বাচন এলেই এরা হেনস্থা করতে চায়। এখন আসানসোল আর বালিগঞ্জে উপনির্বাচন রয়েছে। এঁরা বিভাজনের রাজনীতি আর তদন্তকারী সংস্থার উপর ভর করে বাংলা জিততে চেয়েছিল। হয়নি। হবেও না। বাংলায় হেরেছে বলে ইডি, সিবিআই দিয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছে।’’
অভিষেক আরও বলেন, ‘‘বিজেপি-র সবথেকে বড় জোটসঙ্গী সিবিআই, ইডি। তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে নিজেদের ব্যক্তিগত অস্ত্রে পরিণত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কখনও দেখবেন না অসম, ত্রিপুরার মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যে ইডি-সিবিআই তল্লাশি করছে। মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, তেলঙ্গানার মতো যে রাজ্যে বিরোধীরা ক্ষমতায় রয়েছে, সেখানই দেখবেন এই তদন্তকারী সংস্থগুলি তল্লাশি চালাচ্ছে।’’
বিজেপি-কে হুঁশিয়ারি দিয়ে তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘‘ইডি, সিবিআই-কে কাজে লাগিয়ে যাঁরা নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে চাইছেন, তাঁদের উদ্দেশে আমি বলতে চাই, আমি অন্য মেটিরিয়াল। এ সব যত করবেন, আমি তত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হব, তত নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকব।’’
পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিচারব্যবস্থার উপর আমি আস্থাশীল। আমি তদন্তকারীদের সঙ্গে সহযোগিতাই করছি। ওঁরা ওঁদের কাজ করছেন। আবার ডাকলে আবার আসব। কিন্তু যাঁদের বিরুদ্ধে ভূরি ভূরি অভিযোগ, প্রমাণ রয়েছে, তাঁদের ক’জনকে ডাকছে ইডি, সিবিআই। যাঁদের বিরুদ্ধে সারদার কর্ণধার লিখিত অভিযোগ করেছেন, যাঁদের কাগজে মুড়িয়ে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, তাঁদের কেন ডাকা হচ্ছে না? আমি আজ বিরোধী দলে আছি বলেই আমাকে ডাকা হচ্ছে। যাঁরা বিজেপি করেন, তাঁদের ডাকা হবে না। এ সব ধাপ্পাবাজি বেশি দিন চলবে না।’’