গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত আব্দুল লতিফকে জামিন দিল আসানসোলের সিবিআই আদালত। ফাইল চিত্র।
গরু পাচারকাণ্ডে অভিযুক্ত আব্দুল লতিফের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করল আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত। ১৫ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে, শর্তসাপেক্ষে তাঁকে জামিন দিলেন আসানসোল বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। আগামী ৬ মে পর্যন্ত অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ বলে জানান বিচারক। ওই দিনই মামলার পরবর্তী শুনানি। বিচারকের নির্দেশ— লতিফকে পাসপোর্ট জনা রাখতে হবে। তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। কোনও বেআইনি কাজে লিপ্ত থাকা যাবে না।
বৃহস্পতিবার ভোররাতেই ‘ছদ্মবেশে’ আব্দুল লতিফ ঢুকে পড়েছিলেন আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে। সকালে নজরে এল কালো টুপি, ধূসর-কালো চেক জামা এবং নীল জিন্স পরিহিত বীরভূমের এই ব্যবসায়ীকে। ‘তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত লতিফের মুখে ছিল কালো মাস্ক, চোখে চশমা। বিচারক চক্রবর্তীর কাছে লতিফের আইনজীবী শেখর কুন্ডু জানান সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাঁর মক্কেল আত্মসমর্পণ করতে এসেছেন। বিচারক বলেন, ‘‘আত্মসমর্পণ কোথায় ? তিনি তো অ্যাপিয়ার করতে এসেছেন। আদালতের চোখে তিনি তো পলাতক।’’
তখন লতিফের আইনজীবী দাবি করেন, সিবিআই চার্জশিটে ‘নট অ্যারেস্টেড’ (গ্রেফতার করা হয়নি) লেখা রয়েছে। বিচারক বলেন, আদালত থেকে লতিফের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। বিচারক চক্রবর্তী তখন বলেন, ‘‘আপনারা কী করতে চান বলুন?’’ লতিফের আইনজীবী ব্যক্তিগত (পার্সোনাল) বন্ডে জামিন চান। জবাবে বিচারক বলেন, ‘‘পার্সোনাল বন্ড নয়, এই মামলায় বেল বন্ডে আপিল করতে পারেন। তবে লতিফকে সিবিআই কী ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়, তা জানতে হবে।’’
এর পর সিবিআইয়ের কাছে বিচারক জানতে চান, ‘‘আপনারা ওঁকে কী ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছেন?’’ গরু পাচারকাণ্ডের তদন্তকারী আধিকারিক সুশান্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা ওঁকে নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাই এবং কোঅপারেশন (সহযোগিতা) আশা করব।’’ লতিফের আইনজীবী বলেন, ‘‘আমরা সহযোগিতা করতে রাজি। প্রয়োজনে এখন থেকেই সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে বা সঙ্গে নিয়ে যেতে পারে।’’
যদিও সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় আগামী ৪ মে পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের সুরক্ষাকবচে রয়েছেন লতিফ। তাই তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। তবে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করতে আগ্রহী। এর পরেই তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক। তিনি ‘নিখোঁজ’, তাঁকে ‘ফেরার’ ঘোষণা করতে পারে সিবিআই, বাজেয়াপ্ত করতে পারে তাঁর সম্পত্তিও— এই সব জল্পনার মধ্যেই গত মঙ্গলবার আসানসোলের সিবিআই বিশেষ আদালতের জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানার উপরে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।