—ফাইল চিত্র
চলতি মাসে লাগাতার বৃষ্টিতে এখনও বিপর্যস্ত সিকিম। দীর্ঘ দিন ধরেই বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে বাংলা থেকে সিকিম যাওয়ার ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একটা বড় অংশ। যার জেরে ধাক্কা খেয়েছে পাহাড়ের পর্যটন শিল্প। দাবি, ক্ষতি হয়েছে ৭৫ কোটি টাকা!
গত দু’দিনে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হলেও গরম বাড়ছে পাহাড়় ও সমতলে। তবে জুলাইয়ের প্রথম দিকে টানা বৃষ্টিতে জাতীয় সড়ক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেলফিদাঁড়া, বিরিকদাঁড়া, লিকুভির, রংপো, মেল্লি-সহ বহু জায়গায় রাস্তা বসে গিয়েছে। আবহাওয়া কিছুটা পরিষ্কার হওয়ায় এখন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু হয়েছে সিকিম ও কালিম্পংগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে। ১৯ দিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সড়কের সবচেয়ে খারাপ এলাকা সেলফিদাঁড়ায় পাহাড় কেটে নতুন করে রাস্তা তৈরি হয়েছে। সিকিম প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত জাতীয় সড়কের প্রায় ৬০ শতাংশ মেরামত ও সংস্কার করা গিয়েছে। বৃষ্টি কম থাকলে আগামী সাত দিনের মধ্যে সিকিমের ছ’জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরায় স্বাভাবিক করা যাবে। সিকিম পর্যটন দফতরের অধিকর্তা রবীন বাসনেট বলেন, ‘‘বৃষ্টি ও ধসে সিকিমের অনেক জায়গায় রাস্তার ক্ষতি হয়েছে। সেই সব রাস্তা দ্রুত সারাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সমস্ত রাস্তা ঠিক হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।’’
জাতীয় সড়ক খারাপ হয়ে পড়ে থাকায় এর প্রভাব পর্যটনেও পড়েছে। হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুর ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যালের দাবি, এর জেরে অন্তত ৭৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে সময়টা পর্যটনের মরসুম না হওয়ায় বড় ক্ষতি হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘এখনও পর্যন্ত পর্যটনে ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৫ কোটি টাকা। জাতীয় সড়ক এখনও বন্ধ রয়েছে। তবে এই সময়টায় একটু বুকিং কম থাকায় বড়সড় ক্ষতি হয়নি। কিন্তু সামনেই পুজোর মরসুম। তার আগে জাতীয় সড়ক মেরামত না করলে বিরাট ক্ষতি হতে পারে।’’ জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকায় সিকিমের প্রতি দিন ১০০ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে বলে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রেমসিংহ তামাংও সম্প্রতি দাবি করেছেন।
সিকিম প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্যাংটকের সিংথাম থেকে ডিকচু যাওয়ার রাস্তা দিয়ে একদিকে যান চলাচল শুরু হয়েছে। সিংথাম থেকে সিরওয়ানিগাঁও হয়ে আদর্শগাঁও যাওয়ার সড়ক বন্ধ রয়েছে সেতু ভেঙে যাওয়ার কারণে। সিংথাম থেকে তেমিটার্কু যাওয়ার রাস্তা বন্ধ রয়েছে। তবে ধসে ক্ষতিগ্রস্ত সব রাস্তা খুলে গিয়েছে। পাকইয়ং জেলার পাকইয়ং থেকে রোরথাং যাওয়ার রাস্তাতেও এক দিক দিয়ে যান চলাচল শুরু করেছে। বাকি সব রাস্তা দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। মঙ্গন জেলার মঙ্গন থেকে ফোডং হয়ে গ্যাংটক যাওয়ার রাস্তাটি দিয়ে শুধুমাত্র ছোট গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গন থেকে টুং হয়ে চুংথাং যাওয়ার রাস্তাটি বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি লাচেন থেকে থাঙ্গু ও জিমা যাওয়ার সড়ক বন্ধ রয়েছে। নামচি জেলার নামচি থেকে রাভাংলা যাওয়ার সড়কে একমুখী যান চলাচল শুরু হয়েছে। রাভাংলা থেকে ইয়াংগাং যাওয়ার সড়ক ধসের কারণে বন্ধ রয়েছে। রাভাংলা থেকে লেগশিপ যাওয়ার রাস্তাও বন্ধ। একই ভাবে বারমিয়ক থেকে ফোংলা ও মাল্লি থেকে মাল্লিবাজার যাওয়ার সড়ক বন্ধ রয়েছে। ঘিয়ালসিং জেলার দানতাম থেকে পেলিং যাওয়ার রাস্তা বন্ধ। সোরেং জেলার সোমবারিয়া থেকে জোরথাং ও থারপু যাওয়ার রাস্তাও বন্ধ রয়েছে।